‘প্রযোজনার মধ্যে চিন্তাভাবনা থাকতে হবে’, ছবির আড্ডায় নায়িকা ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত
বর্তমান | ০৩ জুলাই ২০২৫
মুক্তির অপেক্ষায় সায়ন্তন ঘোষাল পরিচালিত ‘ম্যাডাম সেনগুপ্ত’। ছবির আড্ডায় নায়িকা ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।
• ম্যাডাম সেনগুপ্ত কেমন আছেন?
হা হা হা...। ভালো আছি। রিল, রিয়েল দুই ম্যাডাম সেনগুপ্তই ভালো আছে। ছবির নামটা নিয়ে সকলেই খুব কৌতূহলী। অনেকে জানতে চেয়েছেন, এটা কি বায়োপিক? ছবিটা ‘আবোল তাবোল’-এর অনুপ্রেরণায় তৈরি। কার্টুনিস্ট হিসেবে আত্মপ্রকাশ হয় ম্যাডাম সেনগুপ্তর। তারপর একটা তদন্তে জড়িয়ে পড়বে। কিন্তু চিরাচরিত গোয়েন্দা সে নয়।
• কার্টুনিস্টের চরিত্র তো প্রথমবার?
হ্যাঁ, প্রথমবার করলাম। কার্টুনের ব্যাপারটাও আসলে অন্যরকম। ওর মধ্যে অনেকরকম সাইকোলজিক্যাল ব্যাপার থাকে। সেগুলো কার্টুনিস্টরা বোঝেন। সেটা আছে এই গল্পে। এই মেয়েটির যা উপলব্ধি, অন্যদের তা নয়।
• আপনার পছন্দের কার্টুনিস্ট কে?
শৈল চক্রবর্তীর কাজ আমার দারুণ লাগে। সুকুমার রায়, সত্যজিৎ রায়ের কার্টুনও ভালো লাগে। ‘আবোল তাবোল’ নিয়ে বাঙালি এখনও উত্তেজিত।
• নতুন প্রজন্ম এসব জানে কি?
‘আবোল তাবোল’-এর ব্যঞ্জনা, মজা তো নতুনদের জানা উচিত। আমাদের ইতিহাস এত সমৃদ্ধ, সেটা যদি নতুন প্রজন্মের কাছে নিয়ে আসতে না পারি, তাহলে তো ওরা জানবে না। আমি তো আমার সন্তানদের সবসময় বলি, পুরনো বাংলা সাহিত্য পড়ো। আধুনিক ছবিতে অন্য মোড়কে যদি এই বিষয়গুলো দেখানো যায়, তাহলে ওদের আগ্রহ তৈরি হবে। ফর্ম্যাটটা গুরুত্বপূর্ণ।
• এটা কি ফ্র্যাঞ্চাইজি ছবি হবে?
ফ্র্যাঞ্চাইজি ছবি হতে পারে। সায়ন্তন হয়তো সেটা ভেবেই করেছে। আমি কখনও ফ্র্যাঞ্জাইজি ছবি করিনি।
হাতে দুটো ছবি রয়েছে। একটা চৈতি ঘোষালের ছবি ‘নেভারমাইন্ড’ প্রেজেন্ট করছি। আর একটা ছবি আমার প্রোডাকশনের ‘অন্বেষণ’, তৈরি হয়ে রয়েছে। ওগুলো রিলিজ হোক। পরের সাবজেক্টটা এখনও ফাইনাল করিনি।
• অনেক অভিনেতাই প্রযোজনা সংস্থা খুলেছেন, ইন্ডাস্ট্রির জন্য এটা ভালো?
অভিনেতারা প্রযোজনা সংস্থা খুলছে, সেখান থেকে যদি ভালো ছবি তৈরি হয়, অনেক মানুষ কাজ পায়, তাহলে তো খারাপ কিছু নয়। কিন্তু শুধুমাত্র প্রযোজনা করব বলে প্রযোজক হলে মুশকিল। এটার মধ্যেও চিন্তাভাবনা, ডেডিকেশন থাকতে হবে। এখনও শিক্ষিত, ডেডিকেটেড প্রযোজকরা রয়েছেন। যাঁরা ভালোবেসে সিনেমা তৈরি করেন। আর কিছু প্রযোজক হারিয়ে গিয়েছেন। যাঁরা ওয়ান ফিল্ম ওয়ান্ডার হিসেবে এসেছিলেন। অথবা তাঁদের অন্য কোনও আগ্রহ ছিল। আমি যখন প্রযোজনা করেছি, তখন যাতে আরও মানুষকে কাজ দিতে পারি, সেই ভাবনা ছিল। ইন্ডাস্ট্রি আমাকে এত কিছু দিয়েছে, সেখানে যদি কিছু ফিরিয়ে দিতে পারি, তার চেষ্টা করেছি।
• ২৫ বছর পর ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’ ফের মুক্তি পেল। ২৫ বছর আগের ঋতুপর্ণাকে কিছু বলতে চান?
(হাসি) বলতে চাই, যা করেছো, বেশ করেছো। শুধু একটু গুছিয়ে করলে আরও অনেক কিছু করতে পারতে। আমি আসলে ইমোশনালি করেছি অনেক কিছু। তবে কোনও আফশোস নেই। ঈশ্বর আমাকে অনেক কিছু দিয়েছেন।
• ছবিটা দেখলেন আবার?
অবশ্যই। আমি এখন ছবিটা দেখে এত এনজয় করেছি! ভাবছিলাম, কত প্রতিকূলতার মধ্যে কাজ করেছি। সকালে ‘পারমিতার একদিন’-এর শ্যুটিং করে রাতে ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’ করতে গিয়েছি। এখনকার ছেলেমেয়েরা ভাবে আগে চুক্তি করতে হবে। কোন সময় কত টাকা পাচ্ছি, সেটা বুঝে নিতে হবে। তখন আমরা ভাবতাম, কী ভালো একটা চরিত্র পেয়েছি, অভিনয় করব, এটাই আনন্দ। ঘরোয়া ছিল বিষয়টা। এখন অনেক পেশাদার হয়েছে ইন্ডাস্ট্রি। আমার এটা ভাবতে ভালো লাগে, তখনও নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করেছি, এখনও তাই করছি।