ব্যারাকপুরে মেট্রোরেলের কাজ কতদূর? পাইপ সরানোর টাকা কে দেবে, টানাপোড়েন
আজ তক | ০৩ জুলাই ২০২৫
বরানগর থেকে ব্যারাকপুর পর্যন্ত মেট্রো সম্প্রসারণ প্রকল্প বছরের পর বছর ধরে ঝুলে রয়েছে। প্রধান জটিলতা, ডানলপ থেকে ব্যারাকপুর চিড়িয়া মোড় পর্যন্ত বি টি রোডের নীচে থাকা কলকাতা পুরসভার পানীয় জলের পাইপলাইনগুলি। এই পাইপলাইনগুলিই পলতা জলপ্রকল্প থেকে জল সরবরাহ করে টালা ট্যাঙ্কে, যেখান থেকে উত্তর ও মধ্য কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশে জল সরবরাহ হয়।
মেট্রোর পিলার বসাতে গেলে এই পাইপলাইনের তিনটি বড় অংশ সরাতে হবে, যার খরচ প্রাথমিক হিসাবে ১ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে জানা গিয়েছে। এই আর্থিক বোঝা কে বহন করবে, ক’টি পাইপ সরানো হবে, কতটা বড় ব্যাসের নতুন পাইপ বসানো সম্ভব—সব কিছু নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা হবে শুক্রবারের বৈঠকে।
বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন—কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, মেট্রো রেলের শীর্ষ আধিকারিকরা, কেএমডিএ, পূর্ত দপ্তর, উত্তর ২৪ পরগনা ও বারাকপুরের স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিনিধিরা,যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরাও।
মূল সমস্যাগুলি কী?
বি টি রোডের নিচে রয়েছে ৪২ থেকে ৭২ ইঞ্চি ব্যাসের ছ’টি বড় পাইপলাইন।
মেট্রোর পিলার বসানোর জন্য অন্তত তিনটি সরাতেই হবে।
প্রস্তাব, পরিবর্তে বসানো হোক দু’টি ৯০ ইঞ্চি পাইপ।
তবে এত বড় ব্যাসের পাইপ বসানো আদৌ সম্ভব কি না তা নিয়েও সংশয়।
প্রয়োজনে মাইক্রো-পাইলিং বা বিকল্প কোনও প্রযুক্তির সাহায্য নিতে হতে পারে, তার জন্য চাই ফিজিবিলিটি টেস্ট।
এক পুরকর্তা জানিয়েছেন, এত পুরনো পাইপলাইনে বহুদিন জল চলাচল করায় সেগুলির ভেতরে পলি জমে গিয়েছে, ফলে বহনক্ষমতা কমে গিয়েছে। নতুন করে মাঝের অংশে পাইপ বসালে জলের চাপ অমসৃণ হয়ে যেতে পারে। তাই পুরসভা সম্পূর্ণ পাইপলাইন বদলানোর পক্ষপাতী।
তিনি আরও বলেন, ২০০৮-২০১২ সালে একবার এমন একটি পাইপ বসাতে ৩০৫ কোটি টাকা লেগেছিল। সেক্ষেত্রে এখনকার খরচ হাজার কোটি ছাড়াতে পারে, যা প্রকল্প বাস্তবায়নে বড় চ্যালেঞ্জ।
মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ তাদের বিস্তারিত পরিকল্পনা পেশ করবে। পাইপলাইন সরানো অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং তা নিয়ে আমাদের বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে হবে।
মেট্রো সূত্রে জানা গিয়েছে, বরানগর থেকে ব্যারাকপুর পর্যন্ত প্রস্তাবিত এই মেট্রো লাইনের দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ১২.৫ কিমি। এই প্রকল্প চালু হলে উত্তর শহরতলির যোগাযোগ ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন আসবে, তবে তার আগে জলের লাইনের এই জট কাটানোই প্রধান চ্যালেঞ্জ। শুক্রবারের বৈঠক সেই সমাধানের দিশা দেখাতে পারে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।