জঙ্গিপুরে তৃণমূলের পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছেন দলেরই ৯ পুরপ্রতিনিধি। তাঁদের সমর্থন করছে বিজেপি ও কংগ্রেস। এর জেরে রাজ্য-রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জঙ্গিপুর পুরসভার জট কাটাতে তৎপর তৃণমূল কংগ্রেস। আগামী ৮ জুলাই বেলা ৩টের সময় বিশেষ বৈঠক ডাকলেন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। বৈঠকে ডাকা হয়েছে বিধায়ক জাকির হোসেন, সাংসদ খলিলুর রহমান সহ জঙ্গিপুর পুরসভার ১৬ জন তৃণমূল কাউন্সিলর ও দুই টাউন সভাপতিকে। দলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার তৃণমূল কাউন্সিলরদের বার্তা পাঠিয়ে বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা জানিয়েছেন। সূত্রের খবর খবর, বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও।
২৬ জুন জঙ্গিপুর পুরসভার চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন দলেরই কাউন্সিলররা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন এক বিজেপি ও কংগ্রেসের দুই কাউন্সিলর। তাঁদের মধ্যে কংগ্রেসের এক কাউন্সিলর পরবর্তীকালে তৃণমূলে যোগ দেন। কাউন্সিলরদের অভিযোগ ছিল, চেয়ারম্যান কাজ করতে দিচ্ছেন না। উন্নয়নে বাধা পড়েছে। এই অভিযোগ প্রসঙ্গে জঙ্গিপুর পুরসভার চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘শহরের কাজ ভালোই চলছিল। রাস্তাঘাট সব উন্নত হয়েছে। হ্যাঁ, আবর্জনা ফেলার জায়গা নিয়ে একটা সমস্যা রয়েছে। সেটাও ঠিক হয়ে যাবে। আর অনাস্থার বিষয়টি দলকে জানিয়েছি। দল যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবে।’ তৃণমূলের একটি সূত্রে খবর, জঙ্গিপুর পুরসভার এই অন্তর্দ্বন্দ্বের নেপথ্যে বিধায়ক ও চেয়ারম্যানের সংঘাত দায়ী। কিন্তু এ নিয়ে কোনও পক্ষ বাইরে মুখ খুলতে নারাজ।
প্রসঙ্গত, জঙ্গিপুর পুরসভায় ২১টি আসন রয়েছে। শাসক দলের ১, ২, ৮, ৯, ১০, ১৭, ১৯ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, কংগ্রেসের ৪ ও ১৮ এবং বিজেপির ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনাস্থাপত্রে সই করেন। তাঁরা সকলেই বিধায়ক ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। যদিও ভাইস চেয়ারম্যান সন্তোষ চৌধুরী সহ তৃণমূলের ৩, ৬, ১৩, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের শাসকদলের কাউন্সিলররা অনাস্থায় সায় দেননি। তাঁরা চেয়ারম্যানের পক্ষেই রয়েছেন। সূত্রের খবর, বেশ কিছুদিন ধরেই চেয়ারম্যানের সঙ্গে জঙ্গিপুরের বিধায়কের দ্বন্দ্ব চলছিল। মূলত সেই কারণেই শাসকদলের কাউন্সিলাররা দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে যান। তারপর থেকেই অনাস্থা নিয়ে শাসকদলের মধ্যে চাপানউতোর চলছিল। চেয়ারম্যান হিসেবে মফিজুল ইসলাম যোগ্য নন বলে অনাস্থার পক্ষে থাকা কাউন্সিলরদের দাবি। বিধায়কের অঙ্গুলিহেলনেই এই অনাস্থা বলে চেয়ারম্যান পাল্টা অভিযোগ করেছেন।