• প্রেমে প্রতারণার অভিযোগে জেলবাস, জামিন পেয়েই প্রেমিকাকে বিয়ে যুবকের
    প্রতিদিন | ০৪ জুলাই ২০২৫
  • জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: মেয়ে বিশেষভাবে সক্ষম। চলাফেরা করতে গেলে মায়ের কোল ভরসা। এহেন মহিলাকে প্রেমের কথা বলে ফাঁদে ফেলার অভিযোগে জেলবাসে থাকতে হয়েছিল বাগদার যুবককে। মাসখানেক পর জামিন পেতেই অবশ্য চিত্রবদল! বাধ্য হয়ে প্রেমিকার গলায় মালা দিয়ে, সিঁদুর পরিয়ে বিয়ে করতে হল। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা থানা এলাকার হরিনাথপুরের। যদিও বিয়ের পর পাত্র-পাত্রী দু’জনেই খুশি। যুবক বিষ্ণু দাস জানাচ্ছেন, ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল, মিটে গিয়েছে।

    জানা গিয়েছে, বছর দুই আগে বছর বত্রিশের ওই দিব্যাঙ্গ মহিলার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বাগদা থানার হরিনাথপুর এলাকার যুবক বিষ্ণু দাসের। ওই মহিলা এক জায়গা থেকে অন্যত্র যেতে গেলে মায়ের কোলই ছিল একমাত্র ভরসা। মহিলার মা পরিচারিকার কাজ করে কোনওরকমে সংসার চালান। মেয়ের সঙ্গে ফোনে আলাপের সূত্র ধরে সম্পর্ক গড়ে ওঠে স্থানীয় বাসিন্দা বিষ্ণুর। শুরুতে তাঁর প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হলেও, বিষ্ণুর একাধিকবার ভালোবাসা ও বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে ভরসা রেখে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যান মহিলা। দুই পরিবারের তরফেও এই সম্পর্কের বিষয়টি জানা ছিল। ধীরে ধীরে প্রেমিকার বাড়িতে যাতায়াত শুরু করেন বিষ্ণু।

    এরপর প্রেমিকের অনুরোধ আর বিয়ের আশ্বাসে সহবাসেও রাজি হন বিশেষভাবে সক্ষম ওই মহিলা। অভিযোগ, বিষ্ণু দাস প্রেমিকাকে প্রেম ও বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৩০ হাজার টাকা আদায় করেন। প্রেমিকা একটি সমিতি থেকে সেই টাকা তুলে দেন। কিন্তু টাকা নেওয়ার পর থেকেই ধীরে ধীরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে শুরু করেন বিষ্ণু। সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টাও করেন তিনি। এই অবস্থায় প্রতারণার অভিযোগ তুলে বনগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলা। অভিযোগের ভিত্তিতে বিষ্ণু দাসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আদালতের নির্দেশে প্রায় এক মাস জেল হেফাজতে থাকার পর এদিন জামিনে মুক্তি পান তিনি।

    এরপরই ঘটনা মোড় নেয় অন্যদিকে। আইনি জটিলতা থেকে মুক্তি পেতে, জামিন পেয়েই প্রেমিকার গলায় মালা পরিয়ে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন বিষ্ণু। সাক্ষী ছিলেন উভয়পক্ষের আইনজীবী ও আদালতের কর্মীরা। সিঁদুরদান ও মালাবদলের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় বিয়ের অনুষ্ঠান। বিষ্ণু জানান, ”ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল, কিন্তু এখন সব মিটে গিয়েছে। আমরা নতুন করে জীবন শুরু করতে চাই।” নববধূও বলেন, ”এখন ওকে নিয়ে সুখে সংসার করতে চাই।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)