আর ‘ডাক্তার’ নন শান্তনু সেন! দু’বছরের জন্য রেজিস্ট্রেশন বাতিল করল রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল, কেন এই পদক্ষেপ?
আনন্দবাজার | ০৩ জুলাই ২০২৫
নামের পাশে আর ‘ডাক্তার’ লিখতে পারবেন না শান্তনু সেন! পারবেন না প্রেসক্রিপশনও লিখতে! বিদেশি ডিগ্রি নিয়ে বিতর্কে সাসপেন্ড হওয়া তৃণমূল নেতার ডাক্তারি লাইসেন্স দু’বছরের জন্য বাতিল করল রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল।
রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে রেজিস্ট্রেশন না করিয়েই ‘এফআরসিপি গ্লাসগো’ নামে একটি বিদেশি ‘ডিগ্রি’ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল শান্তনুর বিরুদ্ধে। গত মাসেই তা নিয়ে শান্তনুকে নোটিস ধরিয়েছিল কাউন্সিল। বৃহস্পতিবার তাঁকে তলব করা হয়েছিল। এর পরেই কাউন্সিল শান্তনুর ডাক্তারি রেজিস্ট্রেশন দু’বছরের জন্য বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়।
কাউন্সিলের বক্তব্য, ‘এফআরসিপি’ ডিগ্রির কথা কাউন্সিলকে জানাননি শান্তনু। ‘এফআরসিপি’ একটি সাম্মানিক ডিগ্রি। ওই ডিগ্রির ব্যাপারে জানতে গ্লাসগোতে তারা একটি মেলও করেছিল। জানতে চাওয়া হয়েছিল, যাঁদের এই ডিগ্রি রয়েছে, তাঁরা প্র্যাকটিস করতে পারেন কি না। কিন্তু মেলের এখনও কোনও উত্তর আসেনি বলেই জানিয়েছে কাউন্সিল। কাউন্সিলের এই সিদ্ধান্তের পর শান্তনু কি আর ডাক্তারি প্র্যাকটিস করতে পারবেন? জবাবে এক আধিকারিক বলেন, ‘‘তা-ই তো উচিত।’’
ঘটনাচক্রে, দীর্ঘ দিন রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে সরকারের প্রতিনিধি হিসাবে ছিলেন শান্তনু। চলতি বছরের শুরুতে মেডিক্যাল কাউন্সিলের সেই সরকারি পদও হারিয়েছিলেন তিনি। ঘটনাচক্রে, তার ঠিক আগেই শান্তনুকে দল থেকে সাসপেন্ড করে তৃণমূল।
আরজি কর-কাণ্ডের পর থেকেই শান্তনুর অবস্থান এবং তাঁর নিজস্ব মতামত ঘিরে বিতর্ক দানা বাঁধে। ‘মেয়েদের রাত দখল’ কর্মসূচিতে সমর্থন ছিল শান্তনুর। চিকিৎসক নেতার স্ত্রীকেও দেখা গিয়েছিল আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে থাকতে। সেই সময় হাসপাতাল প্রশাসনের অন্দরে ‘দুর্নীতি’র অভিযোগ তুলেছিলেন চিকিৎসক নেতা। আরজি কর পর্বের পর থেকেই শান্তনুর সঙ্গে তৃণমূলের সমীকরণ নিয়ে জলঘোলা শুরু হয়। দলের মুখপাত্রের পদ থেকেও সরানো হয় তাঁকে। বিভিন্ন হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতিতে সরকারি প্রতিনিধিদের তালিকাতেও জায়গা পাননি তিনি। এর পর চলতি বছরের শুরুতে দলবিরোধী কাজের অভিযোগে শান্তনুকে সাসপেন্ড করে তৃণমূল।