• কেন রুদ্ধদ্বার শুনানির প্রয়োজন? কার্তিক মহারাজকে লিখিত আবেদন করতে বলল হাই কোর্ট, তার ভিত্তিতে শোনা হবে রাজ্যের আপত্তি
    আনন্দবাজার | ০৩ জুলাই ২০২৫
  • স্বামী প্রদীপ্তানন্দ ওরফে কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, জোর করে গর্ভপাতের অভিযোগ উঠেছে। সেই মামলার রুদ্ধদ্বার শুনানি (ইন ক্যামেরা) চলছে কলকাতা হাই কোর্টে। তা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে রাজ্য। বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত এই নিয়ে মামলাকারী কার্তিক মহারাজকে লিখিত আবেদন করতে বললেন। কেন রুদ্ধদ্বার শুনানির প্রয়োজন, তা জানাতে হবে কার্তিক মহারাজকে। তার ভিত্তিতেই রাজ্যের আপত্তি শুনবে আদালত।

    এই ধরনের শুনানির ক্ষেত্রে রুদ্ধদ্বার কক্ষে শুনানি চলে। সেখানে বাইরের কারও বা সংবাদমাধ্যমের প্রবেশের অধিকার থাকে না। কার্তিক মহারাজের মামলায় রুদ্ধদ্বার শুনানি নিয়ে আপত্তি জানায় রাজ্য। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্তের সওয়াল, কেন ওই মামলায় রুদ্ধদ্বার শুনানির প্রয়োজন রয়েছে? অন্য সব মামলায় এমন শুনানি করা হয় না। এর পরেই বৃহস্পতিবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত জানান, কেন রুদ্ধদ্বার শুনানির প্রয়োজন, মামলাকারী কার্তিক মহারাজকে সেই বিষয়ে লিখিত আবেদন করতে হবে। তার ভিত্তিতে রাজ্যের আপত্তি শুনবে আদালত। তার পরেই শুনানি নিয়ে বিবেচনা করা হবে। আগামী সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি। এই নিয়ে মহারাজের আইনজীবী কোর্ট জানিয়েছিলেন, মিথ্যা অভিযোগ তুলে মহারাজের সম্মানহানি করা হতে পারে, তাই রুদ্ধদ্বার শুনানির আবেদন করা হয়।

    অন্য দিকে, আগামী শুনানি পর্যন্ত আদালতের কাছে অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ চান কার্তিক মহারাজ। রাজ্য আদালতকে জানায়, মামলা বিচারাধীন থাকাকালীন পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত পুলিশ মহারাজের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করবে না।

    গত ২৮ জুন কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে নবগ্রাম থানায় অভিযোগ করেন এক মহিলা। অভিযোগকারিণীর দাবি, ২০১৩ সালে কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কার্তিক মহারাজ তাঁকে মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানা এলাকার চাণক্য অঞ্চলে এক আশ্রমের প্রাথমিক স্কুলে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে শিক্ষিকার পদে নিয়োগ করা হয়। স্কুলে থাকার জন্য তাঁকে একটি ঘরও দেওয়া হয়েছিল। সেখানে নাকি এক রাতে আচমকাই মহারাজ হাজির হয়েছিলেন। তাঁকে সহবাসের প্রস্তাব দেন। বাধ্য হয়ে তা মেনে নিতে হয় বলে জানান অভিযোগকারিণী। তাঁর আরও অভিযোগ, তার পর দিনের পর দিন তাঁর উপর শারীরিক অত্যাচার চালানো হয়। এমনকি, তিনি সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়লে জোর করে তাঁর গর্ভপাত করানো হয়।

    মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করে নবগ্রাম থানার পুলিশ। সোমবার নবগ্রাম থানার পুলিশ বেলডাঙার ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের অফিসে গিয়ে হাজিরার নোটিস দিয়ে আসে। এফআইআর খারিজের আবেদন জানিয়ে মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন কার্তিক মহারাজ। তাঁর পক্ষের আইনজীবী কৌস্তুভ বাগচী আদালতে জানিয়েছিলেন, তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। মামলা করার অনুমতি দেন বিচারপতি সেনগুপ্ত। বুধবার শুনানির কথা থাকলেও রাজ্যের এজি এই মামলায় সময় চান। বিচারপতি সেই আবেদন মঞ্জুর করেন। বৃহস্পতিবার আদালত কার্তিক মহারাজকে আবেদন করতে বলল। তাঁকে জানাতে হবে, কেন এই মামলায় রুদ্ধদ্বার শুনানির প্রয়োজন।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)