উচ্চ অববাহিকায় প্রবল বৃষ্টি, গঙ্গায় জল বৃদ্ধির সম্ভাবনা, সতর্ক সেচদপ্তর
বর্তমান | ০৪ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ: উচ্চ অববাহিকায় লাগাতার ভারী বৃষ্টি। তার জেরে দু’সপ্তাহের মধ্যেই গঙ্গায় ব্যাপক জলস্তর বৃদ্ধির শঙ্কা থেকে মালদহ জেলায় খোলা হল দু’টি ডিভিশনাল ফ্লাড কন্ট্রোল রুম ও একটি রিজিওনাল ফ্লাড কন্ট্রোল রুম। ভাঙন রোধে মজুত রাখা হচ্ছে বালির বস্তা। বিগত দিনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই ভাঙন রোধে প্রস্তুতি নিচ্ছে মালদহ জেলা সেচদপ্তর। জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়া বলেন, ভাঙন যতটা সম্ভব নিয়ন্ত্রণ করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। সেজন্য যা যা করার দরকার, তার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। গঙ্গার ভাঙনে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তাঁদের পাশে থাকার জন্য তৈরি প্রশাসন।
সেচদপ্তরের বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মালদহে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হলে সাধারণত গঙ্গায় জলস্তর বাড়ে না। কিন্তু উচ্চ অববাহিকা যেমন উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারে লাগাতার ভারী বৃষ্টিপাত হলে গঙ্গায় জল বৃদ্ধি পায়। তিন রাজ্যের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে গঙ্গা বাংলায় প্রবেশ করেছে। উত্তরাখণ্ডে লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে। গঙ্গা সেখানে সরু খাতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত। কিন্তু উত্তরপ্রদেশে প্রবেশের পর থেকেই গঙ্গা চওড়া হতে থাকে। এর ফলে উত্তরাখণ্ডের বৃষ্টির জল বয়ে নিয়ে এলেও গঙ্গায় জল সামান্যই বেড়েছে।
সেচদপ্তরের মালদহ ডিভিশনের এক আধিকারিক বলেন, জুলাইয়ের তৃতীয় থেকে শেষ সপ্তাহের মধ্যেই গঙ্গার জলস্তর বাড়তে শুরু করবে। ফলে ভাঙনের একটা আশঙ্কা রয়েছে। গত বছর গঙ্গা ভাঙনে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল মানিকচক ব্লকের ভূতনি এবং রতুয়া-১ ব্লকের বিলাইমারি। সেই ভয়াবহ ভাঙনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবছর ইতিমধ্যেই ভূতনিতে আড়াই কিলোমিটার রিং বাঁধ তৈরির কাজ প্রায় শেষের পথে। বিলাইমারিতেও ৩০০ মিটার বাঁধের কাজ চলছে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত বালির বস্তা মজুত করে রেখেছে সেচদপ্তর। আপত্কালীন পরিস্থিতিতে সময় নষ্ট যাতে না হয়, সেজন্য এজেন্সিগুলিকেও তৈরি রাখা হয়েছে।
মালদহ জেলায় সেচদপ্তরের দু’টি ডিভিশন। একটি মালদহ ডিভিশন। যারা মূলত গঙ্গার উপর কাজ করে। অপরটি মহানন্দা এমব্যাঙ্কমেন্ট ডিভিশন। যার অধীনে মহানন্দা, ফুলহার নদীগুলি রয়েছে। এই দু’টি ডিভিশনই ডিভিশনাল ফ্লাড কন্ট্রোল রুম চালু করেছে। এছাড়াও মালদহে চালু করা হয়েছে সেচদপ্তরের রিজিওনাল ফ্লাড কন্ট্রোল রুম। এই তিনটি কন্ট্রোল রুম থেকে প্রতি দু’ঘন্টা অন্তর গঙ্গার জলস্তরের উপর নজরদারি চালানো হচ্ছে। প্রশাসনও কন্ট্রোল রুম চালু করেছে পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে। নিজস্ব চিত্র।