নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: মাত্র দু’মাসে শিলিগুড়ির গ্রামীণ এলাকায় উদ্ধার ১০০ বিঘা সরকারি জমি। মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি অরুণ ঘোষের ব্লক নকশালবাড়িতে জমি উদ্ধারের পরিমাণ সর্বাধিক। বুধবার শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের বন ও ভূমি স্থায়ী সমিতির বৈঠকে এমন রিপোর্ট পেশ করেছে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর। একইসঙ্গে তারা জানিয়েছে, ‘মাফিয়া রাজ’ খতম করতে সক্রিয় ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর। এজন্য তারা ব্লক প্রশাসন ও পুলিসকে সঙ্গে নিয়ে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছে। আজ, শুক্রবার ফের মাটিগাড়ায় অভিযানে নামতে পারে তারা।
সভাধিপতি বলেন, জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছি। গ্রামীণ এলাকার কোথাও সরকারি জমি দখল বরদাস্ত করা হবে না। ইতিমধ্যে মহকুমার চারটি ব্লক থেকে কিছু জমি দখলমুক্ত করা হয়েছে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এদিন মহকুমা পরিষদ ভবনে বন ও ভূমি স্থায়ী সমিতির মিটিংয়ে জমি দখলমুক্ত অভিযান নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। সভাধিপতি ছাড়াও মিটিংয়ে বন ও ভূমি স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ কিশোরীমোহন সিং, মহকুমা পরিষদের বিরোধী দলনেতা বিজেপির অজয় ওরাওঁ সহ ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের আধিকারিকরা হাজির ছিলেন। বৈঠকে জমি উদ্ধার নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করেন ভূমিদপ্তরের আধিকারিকরা।
প্রশাসন সূত্রে খবর, মে ও জুন মাসে অভিযান চালিয়ে প্রায় ১০০ বিঘা জমি উদ্ধার করা হয়েছে। অধিকাংশ খাস। এর বাইরে কিছু জমি সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের। সংশ্লিষ্ট জমির মূল্য কয়েক কোটি টাকা। সেগুলির কোথাও প্লট করা হয়েছিল। আবার কিছু জায়গায় বাঁশ, কাঠ ও টিন দিয়ে বাড়ি, হোটেল নির্মাণ করা হয়েছিল। কিছু জায়গায় করা হয়েছে পাকা বাড়িও।
বৈঠকের পর বন ও ভূমি স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ বলেন, দু’মাসে মাটিগাড়া, নকশালবাড়ি, খড়িবাড়ি ও ফাঁসিদেওয়া ব্লকে অভিযান চালিয়ে প্রায় ১০০ বিঘা জমি উদ্ধার করা হয়েছে। যার মধ্যে নকশালবাড়িতে সর্বাধিক প্রায় ৫০ বিঘা জমি। ইতিমধ্যে সেই জমিগুলিতে সরকারি সাইনবোর্ড ঝোলানো হয়েছে। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট জমিগুলি সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে লাগানো হবে। এই অভিযানে আরও জোর দেওয়া হচ্ছে।
মহকুমার গ্রামীণ এলাকায় জমি মাফিয়াদের দাপট দীর্ঘদিনের। এজন্য বিভিন্ন সময় ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কর দপ্তরের আধিকারিকদের রদবদল করা হয়। জমির বেআইনি কারবারের অভিযোগে কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়। এতকিছুর পরও জমি হাঙরদের দৌরাত্ম্য শেষ করা যায়নি। এবার জমি উদ্ধারে জোর দেওয়া হয়েছে। কয়েকদিন আগে চম্পাসারিতে, মঙ্গলবার খড়িবাড়িতে, বৃহস্পতিবার নকশালবাড়িতে অভিযান চালানো হয়।
এতকিছুর পরও জমি ইস্যুতে প্রশাসনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিজেপি। মহকুমা পরিষদের বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত প্রশাসনের উদাসীনতার জেরেই এখানে মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য অব্যাহত। পাল্টা বন ও ভূমি স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষের বক্তব্য, ওঁর চোখে সমস্যা হয়েছে। তাই মিথ্যা অভিযোগ করছেন।