• ১০০ দিনের টাকা নয়ছয়ে অভিযুক্ত তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান
    বর্তমান | ০৪ জুলাই ২০২৫
  • সংবাদদাতা, মানিকচক: তৃণমূলের প্রাক্তন গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে ১০০ দিনের কাজের টাকা নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ। ঘটনায় অভিযুক্ত রতুয়া-২ ব্লকের শ্রীপুর-২ পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান সেরিনা বিবি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা নেজামুদ্দিন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে মালদহের পুলিস সুপারকে দ্রুত তদন্ত করে অর্থ পুনরুদ্ধারের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। পুলিসকে বেঁধে দেওয়া হয়েছে সময়সীমাও। শ্রীপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বর্তমান প্রধান আদালতের নির্দেশেকে মান্যতা দিয়ে তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতার কথা জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে বুধবার রতুয়া-২ ব্লক প্রশাসন জরুরি বৈঠকও করে।

    ২০১৭-২০২১ সাল পর্যন্ত শ্রীপুর-২ পঞ্চায়েতের প্রধান পদে ছিলেন সেরিনা বিবি। একশো দিনের প্রকল্পের টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। মামলাকারী নেজামুদ্দিনের দাবি, প্রায় ১৫ কোটি টাকা আত্মসাত্ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের এই প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান। সবটাই হয়েছে একশো দিনের প্রকল্পে। অভিযুক্ত সেরিনা বিবির কথায়, এটা আদালতে বিচারাধীন। এই বিষয়ে আর কিছু বলতে চাই না।

    ১০ লক্ষ টাকার বেশি বিভিন্ন প্রকল্পকে কম অঙ্কে রূপান্তরিত করে কোনও টেন্ডার ছাড়াই বেআইনিভাবে দিয়ে দেওয়া হয়েছে কাজ। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, এক লক্ষ টাকার বেশি কোনও প্রকল্প হলে সেখানে টেন্ডার ডাকতে হয়। কিন্তু প্রাক্তন প্রধান সেরিনা সেই প্রক্রিয়া এড়াতেই টাকার পরিমাণ কমিয়ে দেখান। মাশরুম থেকে শুরু করে ড্রাগন ফল চাষের বিভিন্ন প্রকল্পের নামে বিপুল টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। ২০২১ সালে সরকারি কাজ আত্মীয়দের পাইয়ে দিয়ে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। 

    এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সেসময় ব্লক ও মালদহ জেলা প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা নেজামুদ্দিন। এরপরই তিনি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। নেজামুদ্দিন বলেন, জেলায় সুবিচার না পেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করি। তদন্ত শুরু হয়। কলকাতা হাইকোর্ট প্রায় ৬১ লক্ষ ৫৭ হাজার ৭৯৭ টাকা আদায়ের জন্য পুলিস সুপারকে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন এবং সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। এখানে প্রায় ১৫ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। প্রাক্তন শ্রীপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সম্পূর্ণ টাকা ফেরত দিন। ইতিমধ্যে আদালতের চিঠি পেয়েছেন শ্রীপুর পঞ্চায়েতের বর্তমান প্রধান অনিকুল হক। তিনি বলেন, তদন্তে সমস্ত ধরনের সহযোগিতা করব। এবিষয়ে রতুয়া-২ এর বিডিও শেখর শেরপা বলেন, শ্রীপুর পঞ্চায়েতের সদস্য, কর্মী ও ব্লকের কর্মীদের নিয়ে জরুরি বৈঠক হয়েছে। 

    পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করা হবে। হাইকোর্ট পুলিস সুপারকে তদন্ত করে অর্থ পুনরুদ্ধারের নির্দেশ দিয়েছে। আমরা সমস্ত দিক দিয়ে সাহায্য করব। 
  • Link to this news (বর্তমান)