নিজের কেন্দ্রেই আক্রান্ত মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, কাটল হাত
বর্তমান | ০৪ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান ও সংবাদদাতা, কালনা: বৃহস্পতিবার নিজের বিধানসভা কেন্দ্রেই আক্রান্ত হলেন রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। ব্যাপক বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি তাঁকে হেনস্তা করা হয়। মন্ত্রীর হাত কেটে গিয়েছে। গাড়ির কাচ ভাঙচুর করা হয়। বেশ কিছুক্ষণ ধরে কালো পতাকা হাতে তাঁকে ঘিরে গো-ব্যাক স্লোগান দেওয়া হয়। এসবের পিছনে মন্তেশ্বরের দাপুটে নেতা আহমেদ হোসেনের অঙ্গুলিহেলন রয়েছে বলে মন্ত্রীর অভিযোগ। তিনি বলেন, এদিন আমাকে প্রাণে মারার চক্রান্ত করা হয়েছিল। আহমেদ নিজেকে বেতাজ বাদশা বলে মনে করে। আমি তোলাবাজির প্রতিবাদ করায় বাইরে থেকে লোক এনে এমনটা করা হয়েছে। ওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে দল ছেড়ে দেব। আহমেদ অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।
পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, দলের পতাকা নিয়ে কেউ বিক্ষোভ দেখায়নি। তবুও আমরা ব্লক সভাপতির কাছে বিষয়টি জানতে চেয়েছি। তিনি কী রিপোর্ট দেন তা দেখা হচ্ছে। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা সিদ্দিকুল্লা দলের কর্মসূচিতে যোগ দিতে মন্তেশ্বরে এসেছিলেন। একাধিক রাস্তার মোড়ে দফায় দফায় ঝাঁটা, কালো পতাকা হাতে বিক্ষোভ দেখানো হয়। পুলিস বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। তারপরও তারা পুলিসের ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যায়। বিক্ষোভকারীদের দাবি, মন্তেশ্বর ব্লকে সিদ্দিকুল্লা সাহেবকে সেভাবে দেখা যায় না। এলাকার উন্নয়ন নিয়ে তেমন কোনও পদক্ষেপ নেননি। মন্তেশ্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি কুমারজিৎ পান বলেন, মন্ত্রী হয়েও এলাকায় উন্নয়ন করেননি। বিগত বছরগুলিতে তাঁর দেখা পাওয়া যায়নি। টিকিট পেতে চার বছর পর এলাকার কথা মনে পড়েছে। কয়েকজনকে নিয়ে ছড়ি ঘোরাতে চাইছেন। আর যাঁরা ঘাম ঝরিয়ে তৃণমূল দলকে জিতিয়ে এনেছেন, তাঁদের তিনি চেনেন না। এদিনের ঘটনায় দলের ঝান্ডা নিয়ে কোনও বিক্ষোভ হয়নি। সাধারণ বঞ্চিত মানুষ পথে নেমে প্রতিবাদ বিক্ষোভ দেখিয়েছে বলে শুনেছি। বিধায়কের এদিনের কর্মসূচি সম্পর্কে আমাদের কোনওকিছু জানানো হয়নি। তৃণমূল সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, কয়েক মাস ধরেই মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আহমেদ হোসেনের সঙ্গে বিধায়ক সিদ্দিকুল্লার লড়াই তুঙ্গে উঠেছে। সম্প্রতি তাঁদের দু’জনের দ্বন্দ্ব বেশ কয়েকবার প্রকাশ্যে এসেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, কয়েক মাস আগেও ‘ভাইজান’এর সঙ্গে সিদ্দিকুল্লা সাহেবের সম্পর্ক ভালোই ছিল। কিন্তু সম্প্রতি বিভিন্ন ইস্যুতে তাঁদের সম্পর্কে চিড় ধরে। সামনে বিধানসভা নির্বাচন। সেই কারণে ভাইজান এই এলাকার রাশ নিজের হাতে রাখতে চাইছেন। রাস্তা পরিষ্কার থাকলে বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর শিকে ছিঁড়তে পারে, এমনই প্রত্যাশা অনুগামীদের। অন্যদিকে সিদ্দিকুল্লা সাহেবও জমি ছাড়তে নারাজ। তিনিও কয়েক মাস ধরে তাঁর নিজের এলাকায় কর্মসূচি বাড়িয়েছেন।-নিজস্ব চিত্র