‘হাসপাতালের বাইরে বের হলে মেরে ফেলব তোদের’, কাটোয়া হাসপাতালের দুই নার্সকে হুমকি
বর্তমান | ০৪ জুলাই ২০২৫
সংবাদদাতা, কাটোয়া: ‘বাইরে বের হলে মেরে ফেলব তোদের।’ কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে কর্তব্যরত দুই নার্সকে খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল রোগীর আত্মীয়দের বিরুদ্ধে। এক মহিলা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় দুই নার্সকে চূড়ান্ত হেনস্তা করে বলে অভিযোগ। বুধবার মাঝরাতে প্রসূতি বিভাগে এই ঘটনায় হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নার্সরা আতঙ্কে ভুগছেন। ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। হাসপাতাল সুপার বিপ্লব মণ্ডল বলেন, দু’জন নার্স ডিউটিতে ছিলেন। রোগীর সঙ্গে আসা অতিরিক্ত লোকজনকে নার্সরা বাইরে দাঁড়াতে বলেন। সেকারণে ওরা নার্সদের মদ্যপ অবস্থায় গালিগালাজ করে। হুমকিও দেয়। আমরা পুলিসকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রসববেদনা ওঠায় কোয়েল মাঝি দাস নামে এক প্রসূতিকে রাত ১২টা নাগাদ ভর্তি করা হয়। তাঁর সঙ্গে বেশ কয়েকজন আসেন। তাদের মধ্যে তিনজন মহিলাও ছিল। সেইসময় হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে ডিউটি করছিলেন নার্স সঞ্চিতা ক্ষেত্রপাল ও অমৃতা গড়াই। তাঁরা ওই গৃহবধূর সঙ্গে আসা অতিরিক্ত লোকজনকে গেটের বাইরে যেতে বলেন। কারণ প্রসূতি বিভাগে রোগীর সঙ্গে এক বা দু’জন থাকার অনুমতি রয়েছে। অভিযোগ, এরপরই রোগীর পরিজনরা মারমুখী হয়ে ওঠে। এক যুবতী দুই নার্সকে খুনের হুমকি দেয়। নার্সদের হেনস্তাও করে। নিরাপত্তারক্ষীদের জানানো সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমনকী হাসপাতালে থাকা পুলিস ক্যাম্পও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ।
নার্স সঞ্চিতা ক্ষেত্রপাল বলেন, হাসপাতালে ত্রিস্তর নিরাপত্তারক্ষী রয়েছে।
এমনিতেই রোগীর সঙ্গে অনেক লোকজন ঢোকার নিয়ম নেই। সেখানে আমরা রাতে ডিউটি করছি। কীভাবে একজন মদ্যপ মহিলা ঢুকে পড়ল? আমাদের নিরাপত্তা কোথায়। হাসপাতালের বাইরে বের হলে খুনের হুমকি দিয়েছে। আমরা রাতে ডিউটি করছি। নিরাপত্তা কোথায়? হাসপাতালে থাকা পুলিসকে বলা সত্ত্বেও ওই মেয়েটিকে ধরে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত, এর আগেও এই হাসপাতালের নার্সকে হেনস্তা, চুলের মুঠি ধরে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল। তারপরও অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। এমনকী, হাসপাতালের নার্স কোয়ার্টারের দোতলায় মদ্যপ অবস্থায় বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালকের দাপাদাপির অভিযোগ উঠেছিল। এই ঘটনার পর কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নার্সরা রীতিমতো আতঙ্কে ভুগছেন। রাতে হাসপাতালে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সিসি ক্যামেরায় ফুটেজ দেখে দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি তোলা হয়েছে।