জোগান স্বাভাবিক রাখতে জেলায় খরিফ ও লেট খরিফ মরশুমে পেঁয়াজ চাষে জোর
বর্তমান | ০৪ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: পেঁয়াজের ঝাঁঝে আমজনতার চোখে মাঝেমধ্যেই জল আসে। মধ্যবিত্তের পকেটে ধরে টান। এই পরিস্থিতিতে এবার বীরভূম জেলা পেঁয়াজ উৎপাদনে স্বনির্ভরতার পথে হাঁটতে শুরু করেছে। মূলত বর্ষার মরশুমে আচমকা পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি রোখাই মূল লক্ষ্য। সে কারণে খরিফ ও লেট খরিফ মরশুমে পেঁয়াজ চাষে জোর দেওয়া হচ্ছে। চলতি মরশুমে জেলায় মোট ৬০০ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই মোতাবেক জেলার উদ্যান পালন দপ্তর ইতিমধ্যে জমি খোঁজা শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, এই মরশুমি চাষ হবেক্লাস্টারভিত্তিক। এ নিয়ে জেলার চাষিদের উদ্বুদ্ধ করার কাজও চলছে। চাষিদের আগ্রহ বাড়াতে বিনামূল্যে পেঁয়াজ বীজ বিলির সিদ্ধান্ত হয়েছে। জমি চিহ্নিতকরণের কাজ চূড়ান্ত হওয়ার পরই পেঁয়াজের বীজ বিলি করা হবে। এবিষয়ে জেলা উদ্যান পালন দপ্তরের আধিকারিক সুবিমল মণ্ডল বলেন, জেলার চাহিদা পূরণে ভিন রাজ্য থেকে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। তবে উৎপাদনে ঘাটতি হলে বর্ষার সময়ে জেলায় সঙ্কট দেখা দেয়। এছাড়াও নানা কারণে বর্ষার মরশুমে চাহিদা অনুসারে পেঁয়াজ এসে পৌঁছয় না। সেক্ষেত্রে খোলা বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতেই বীরভূমে পেঁয়াজ চাষে জোর দেওয়া হচ্ছে।
বীরভূম জেলাজুড়ে এই সময়ে মূলত ধানের চাষ হয়। তবে একটু উঁচু জমিতে ধান চাষ সম্ভব হয় না। সেই সব জমিতে খরিফ ও লেট খরিফ মরশুমে পেঁয়াজ চাষ করা হবে। দপ্তরের তরফে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৫০ বিঘা ওইরকম জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বাকি ৪৫০ বিঘা জমিও চিহ্নিত করা হয়ে যাবে। খরিফ ও লেট খরিফ পেঁয়াজ চাষের ক্ষেত্রে মূলত ক্লাস্টার পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট একটি এলাকায় একাধিক চাষিকে একত্রিত করে যতটা সম্ভব বেশি পরিমাণ জমিতে চাষ করারলক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
জেলায় ঘাটতি মেটাতে কর্ণাটক, কেরল, গুজরাত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। যদিও বর্ষার মরশুমে অনেক সময়ে তাতে ভাটা পড়ে। দপ্তর সূত্রে খবর, প্রয়োজন অনুসারে চাষিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, আগামী দু’ সপ্তাহ বাদে জেলায় পেঁয়াজ বীজ এসে পৌঁছবে। তারপরই পর্যায়ক্রমে তা চাষিদের মধ্যে বিলি করা হবে। তারপরই শুরু হবে চাষ। অক্টোবর-নভেম্বর মাসে মাঠ থেকে পেঁয়াজ তোলা হবে। তবে, এই পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা হবে না। মাঠ থেকে তুলেই সরাসরি খোলা বাজারে বিক্রি করা হবে। পেঁয়াজের দর আকাশ ছুঁতে শুরু করলে পরিস্থিতি সামাল দিতে খরিফ ও লেট খরিফ পেঁয়াজ অনন্য ভূমিকা পালন করবে। নিজস্ব চিত্র