• হস্টেলে রহস্যমৃত্যু অষ্টমের ছাত্রের, কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ
    বর্তমান | ০৪ জুলাই ২০২৫
  • সংবাদদাতা, মানিকচক: মানিকচকের এক বেসরকারি স্কুলের হস্টেলে এক নাবালক ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে শোরগোল। মৃত ছাত্রের নাম শ্রীকান্ত মণ্ডল (১৩)। সে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল। বুধবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তুলেছে মৃত ছাত্রের পরিবার। যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, স্কুলে কোনও মারধর বা অত্যাচারের ঘটনা ঘটেনি। রাতেই মৃতদেহ উদ্ধার করে মানিকচক থানার পুলিস বৃহস্পতিবার সকালে ময়নাতদন্তে পাঠায়। তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। যদিও পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।

    ভূতনির হিরানন্দপুর অঞ্চলের কেদারটোলায় বাড়ি মৃত ছাত্রের। তার বাবা প্রেম কুমার মণ্ডল পরিযায়ী শ্রমিক। বাড়িতে বাবা-মা ছাড়াও দুই ভাই, বোন রয়েছে। তিন বছর আগে মানিকচকের ওই স্কুলে ভর্তি হয় শ্রীকান্ত। স্কুলে প্রায় ২৫০ জন ছাত্রছাত্রী। তার মধ্যে ১৩৬ জন স্কুলের হস্টেলে থাকে। শ্রীকান্তও হস্টেলে থাকত। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত ৯টা নাগাদ পড়াশোনার পর সবাই নিজ নিজ রুমে গেলে কয়েকজন ছাত্র চিৎকার করে। চিৎকার শুনে শিক্ষকরা সেখানে গিয়ে কে চিৎকার করেছে জানতে চান। ভয়ে কেউ মুখ না খুললেও পরে শ্রীকান্ত স্বীকার করে সে চিৎকার করছে। তারপর সকলকে খাওয়াদাওয়া করে ঘুমোতে বলা হয়। পরবর্তীতে স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাজির হোসেন রাতে হস্টেলের সমস্ত রুমে রুটিন পরিদর্শনে গেলে শ্রীকান্তকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে মানিকচক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপর খবর দেওয়া হয় পরিবারকে।

    পরিবারের অভিযোগ, ছেলের উপর অত্যাচার করায় মৃত্যু হয়েছে। শ্রীকান্তর ঠাকুরদা প্রবীর মণ্ডল বলেন, স্কুল প্রথমে জানায় ছেলে অসুস্থ। পরে বলা হয় সে মারা গিয়েছে। যেখানে মৃত্যু হয়েছে, শ্রীকান্ত ছাড়াও আরও ৪৪ জন ছাত্র ছিল। তারা কেন কিছু দেখতে পেল না? আসলে  আমার নাতি চিৎকার করায় তাকে মারধর ও অত্যাচার করার ফলেই মৃত্যু হয়েছে। আমরা মানিকচক থানায় অভিযোগ জানাব। 

    স্কুলের এক শিক্ষিকা লক্ষ্মীরানি সরকার বলেন, রাতে খাওয়াদাওয়ার পর শ্রীকান্ত ঘুমিয়ে পড়ে। তাকে মারধর বা অত্যাচার করার কোনও প্রশ্নই ওঠেনা। ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে। তবে কেন সে আত্মহত্যা করল, সে বিষয়ে জানা নেই। মৃতের এক  রুমমেট ও সহপাঠী বলে, শ্রীকান্ত চিৎকার করায় এক শিক্ষক সামান্য বকাঝকা করেছিলেন। কেউ মারধর করেননি।

    স্কুলের মালিক তথা প্রধান শিক্ষক সাজির হোসেনের দাবি, মৃত ছাত্রকে মারধর বা অত্যাচার করা হয়নি। কেন ছাত্রের পরিবার আমার বা স্কুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে, জানি না। পুলিসকে তদন্তে সবরকম সহায়তা করছি। মানিকচক থানার এক আধিকারিক জানান, ময়নাতদন্তের পর পরিবার লিখিত অভিযোগ করবে বলে জানিয়েছে। কিন্তু আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।  মৃত শ্রীকান্ত মণ্ডল।
  • Link to this news (বর্তমান)