• ডোমকলে বন্দুক ও ওয়ানশটার তৈরির কারখানার হদিশ, ধৃত ১
    বর্তমান | ০৪ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: মুর্শিদাবাদের ডোমকলে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারখানা চলছে বলে গোপনে পুলিসকে জানিয়েছিল বাসিন্দারা। সেই মতো  বুধবার গভীর রাতে মুর্শিদাবাদ পুলিসের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ ও ডোমকল থানার যৌথ অভিযানে ফাঁস হয়ে যায় বিপুল অস্ত্র ভাণ্ডারের পর্দা। একটি বসত বাড়ির নীচের তলাকে অস্ত্র কারখানায় পরিণত করেছিল মালিক সিরাজ মণ্ডল। তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। উদ্ধার হয়েছে একাধিক অস্ত্র ও অস্ত্র তৈরির বিপুল সামগ্রী। এছাড়া অভিযুক্তের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকার জাল নোটও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। অভিযুক্ত যুবককে বৃহস্পতিবার আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিস। 

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ডোমকলের ঘোড়ামারা অঞ্চলের নিশ্চিন্দপুরের ওই বাড়িতে নির্দিষ্ট খবরের ভিত্তিতে পুলিসের এসওজি টিম ও ডোমকল থানা যৌথ অভিযান চালায়। সেই বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বিপুল অস্ত্র ও অস্ত্র তৈরির সামগ্রী। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, একটি আধুনিক রাইফেল ও তিন রাউন্ড থ্রি-নট-থ্রি গুলি, চারটি পাইগান সহ ন’রাউন্ড গুলি। ১২ টি অসমাপ্ত পাইপগান, একটি খালি কার্টিজ। এছাড়াও পাওয়া গিয়েছে, দুটি হাইড্রোলিক পাইপ, পাঁচটি সাধারণ পাইপ, একটি ড্রিল মেশিন, কাটিং মেশিন, একটি এয়ার ব্লোয়ার, দুটি বন্দুক তৈরির ডাইস, ধাতব শীট একটি, একটি বড় ও একটি ছোট বড় গোলা বারুদ। এছাড়াও হ্যাসকো ব্লেড ২টি, প্লাস একটি, একটি হাতুড়ি-সহ অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহৃত অন্যান্য ছোট লোহার সরঞ্জাম উদ্ধার হয়েছে। বাড়ি থেকে বছর ছাব্বিশের সিরাজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কতদিন ধরে ওই বাড়িতে অস্ত্র কারখানা চলছিল, তা জানার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিস। 

    মুর্শিদাবাদের পুলিস সুপার কুমার সানিরাজ বলেন, ‘এই অস্ত্র কারখানা হদিশের পাশাপাশি যে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি। বিপুল অস্ত্র এবং অস্ত্র তৈরির সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করতে পেরেছি। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে আমরা গোপন সূত্রে এই খবর পাই। সাধারণ মানুষই আমাদেরকে সাহায্য করেছে। যাতে এলাকায় কোনও বোমা বারুদ ও অস্ত্রসস্ত্র মজুত না হয়। আরও বেশ কিছু জায়গা থেকে আমরা বিভিন্ন খবর পাচ্ছি। আমাদের ধারাবাহিক এই অস্ত্র উদ্ধারের অভিযান চলবে।’

    এত বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও অস্ত্র তৈরির যন্ত্রপাতি মজুত থাকার খবর সামনে আসতেই স্থানীয় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনায় বড়সড় চক্র জড়িত থাকতে পারে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। ডোমকল থানার আইসি পার্থসারথি মজুমদার বলেন,  ‘অস্ত্র ও জাল নোটের উৎস কী এবং কোথায় তা সরবরাহ হত, সে বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। ধৃতের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই কারখানায় আরও দু’ তিনজন যুবকের আনাগোনা ছিল। তারা সকলেই অস্ত্র কারবারের সঙ্গে যুক্ত বলেই মনে করা হচ্ছে। পুলিস তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও বেশকিছু তথ্য পেয়েছে তদন্তকারী আধিকারিকরা। ডোমকলে  দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হওয়া অস্ত্র জেলার কোথায় কোথায় সরবরাহ হতো, সেই রুট খুঁজে বের করতে মরিয়া পুলিস। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)