দীপন ঘোষাল, রানাঘাট: নদীয়া জেলাজুড়ে ফের শুরু হয়েছে আবাস যোজনার সার্ভে। রাজ্য সরকারের বরাদ্দ অর্থে নদীয়া জেলায় ইতিমধ্যেই দু’ কিস্তিতে বাড়ি নির্মাণের টাকা পেয়েছেন ৪৬ হাজার ৪৬৭জন উপভোক্তা। কিন্তু, এবার সার্ভের তালিকায় রয়েছেন প্রায় দ্বিগুণ আবেদনকারী। জুলাই মাসেই পূর্ণাঙ্গ সার্ভে করে রিপোর্ট তৈরির কাজ সম্পন্ন হবে। যদিও এই দ্বিতীয় পর্বের প্রথম কিস্তির টাকা কবে ঢুকবে তার নির্দিষ্ট কোনও দিনক্ষণ এখনও জানায়নি রাজ্য সরকার।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় সরকার আবাস যোজনার টাকা না দেওয়ায় রাজ্য সরকার একাই সেই ব্যয়ভার নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিল। রাজ্যজুড়ে কয়েক লক্ষ মানুষ দুই কিস্তিতে বাড়ি তৈরির ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পেয়েছিলেন। নদীয়া জেলায় ১৮টি ব্লক মিলিয়ে এই সংখ্যাটা ছিল ৪৬ হাজার ৪৬৭ জন। জেলা প্রশাসনের রিপোর্ট বলছে, ইতিমধ্যেই তাদের ৯৮.৫ শতাংশ বাড়ির লিন্টেল পর্যন্ত কাজ শেষ করেছেন। এমতাবস্থায় ফের ব্লকে ব্লকে শুরু হয়েছে সার্ভের কাজ। প্রশাসন সূত্রে খবর, সর্বমোট আবাস আবেদনকারীর তালিকায় ছিলেন ১ লক্ষ ২৮ হাজার মানুষ। তাঁদের মধ্যে প্রথম পর্বে টাকা পেয়েছেন ৪৬ হাজার মানুষ। অর্থাৎ এখনও বাকি ৮৬ হাজার ৬৪৯ জন আবেদনকারী। যাঁরা এতদিন ‹পার্মানেন্ট ওয়েটিং লিস্ট› এর অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। গ্রাম পঞ্চায়েতস্তরে তাঁদের ভেরিফিকেশন হয়ে গিয়েছিল আগেই। এবার শুরু হয়েছে ব্লক স্তরের ‹সুপিরিয়র চেকিং›। অর্থাৎ ব্লক প্রশাসনের কর্তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে যাচাই করবেন আদৌ তাদের মধ্যে কে কে সত্যিকারের যোগ্য। অনুমান করা হচ্ছে, বিধানসভা ভোটের আগেই বাড়ি তৈরির জন্য টাকা পাবেন এই ৮৬ হাজার মানুষ।
এখনও পর্যন্ত এই ৮৬ হাজারের মধ্যে ৫১ হাজার ৭৬৫ জনের ব্লকস্তরের যাচাইয়ের কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। বাকি রয়েছে মাত্র ৩৪ হাজার ৮৮৪ জনের সার্ভে। এর মধ্যে সার্ভের কাজ প্রায় শেষ করে ফেলেছে কৃষ্ণনগর-২ এবং চাকদহ ব্লক। তবে অনেকটাই পিছিয়ে নবদ্বীপ, কালীগঞ্জ, হাঁসখালি এবং কৃষ্ণগঞ্জ ব্লক। এর মধ্যে অবশ্য কালীগঞ্জের উপ নির্বাচনের কারণে সার্ভের কাজ ব্যাহত হয়েছে। তবুও জেলা প্রশাসন লক্ষ্য নিয়েছে জুলাই মাসের মধ্যেই সার্ভের কাজ সম্পূর্ণ করার। তবে এবারেও দুই কিস্তিতে টাকা ঢুকবে না একবারেই দিয়ে দেওয়া হবে, তার স্পষ্ট নির্দেশিকা এখনও জেলায় আসেনি।
অতিরিক্ত জেলাশাসক(জেলাপরিষদ) অনুপকুমার দত্ত বলেন, রাজ্য সরকার আমাদের ওয়েটিং লিস্টে থাকা তালিকা পর্যালোচনার জন্য নির্দেশিকা দিয়েছে। সেই মতো আমরা প্রায় ৮৬ হাজার মানুষের সার্ভে শুরু করে দিয়েছি। যার প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। তবে এই ওয়েটিংলিস্টে থাকা উপভোক্তারা কবে টাকা পাবেন, তার দিনক্ষণ আমাদের জানানো হয়নি। আপাতত পিছিয়ে থাকা ব্লকে জোর কদমে চলছে ঝাড়াই বাছাইয়ের কাজ।