নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: পুরুলিয়া শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাজার হাটতলা যেন নরকে পরিণত হয়েছে। যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে পচা সব্জি, মাংসের দোকানের বর্জ্য, মুরগির নাড়িভুঁড়ি। তীব্র দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে ওইসব আবর্জনার স্তূপ থেকে। বাজারে যাওয়াই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে বাসিন্দাদের কাছে। এনিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বাসিন্দারা। অভিযোগ গিয়েছে পুর প্রতিনিধি কানেও। তবুও তাঁরা নির্বিকার!
পুরুলিয়া শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাজার হাটতলা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দৈনিক কয়েক হাজার মানুষের আনাগোনা লেগেই রয়েছে এখানে। কিন্তু এখানকার পরিবেশ সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই হাটে নিত্য বাজার করতে আসা মিনতি মাহাত বলছিলেন, এটা বাজার নাকি আবর্জনার স্তূপ বোঝা দায়! কোনও সিস্টেম নেই। যে যেখানে পড়ছে আবর্জনা ফেলে দিচ্ছে। বিশেষ করে সব্জি ও মাংস ব্যবসায়ীরা দোকানের বর্জ্য একেবারে রাস্তার মাঝে ফেলে দিচ্ছেন। দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। নাকে রুমাল চাপা না দিলে বাজার করা অসম্ভব। আর এক ক্রেতা দেবশিস দাস বলেন, এই বর্ষায় হাটতলায় বাজার করতে গেলে মনে হয় নরকে এসেছি! শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রবীণ বাসিন্দা স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, আমরা যাঁরা এত অব্যবস্থা সত্বেও এই বড়হাটে বাজার করতে যাই, হয় তাঁরা জংলি, না হয় পুরসভাটা জংলিদের ডেরা!
নিয়মিত সাফাই না চালানোয় রোগ ছড়ানোরও শঙ্কা করছেন বাসিন্দাদের একাংশ। চিকিত্সকরা জানাচ্ছেন, এই আবর্জনা ওদুর্গন্ধ থেকে শ্বাসকষ্ট, ত্বকের রোগ ও অন্যান্য সংক্রামক রোগের সম্ভাবনা রয়েছে। শহরবাসীর দাবি, পুরসভার এনিয়ে জরুরি পদক্ষেপ করা উচিত। ব্যবসায়ীদের বর্জ্য ফেলার নির্দিষ্ট স্থান ঠিক করে দেওয়া উচিত। আবর্জনা যাতে নিয়মিত পরিষ্কার হয়, সেই বিষয়েও নজর দেওয়া উচিত। সুরাহা চাইছেন ব্যবসায়ীরাও। হাটতলায় পুরসভার যে হাটটি রয়েছে, তার সংস্কারের দাবিও জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এনিয়ে পুরসভার চেয়ারম্যান নবেন্দু মাহালি বলেন, পুরসভার তরফে নিয়মিত সাফাই অভিযান চালানো হয়। কীটনাশকও ছড়ানো হয়। তবে, কিছু ব্যবসায়ী নির্দিষ্ট জায়গায় আবর্জনা না ফেলে রাস্তার উপরে ফেলে দেন। তাঁদের জন্যই এই সমস্যা তৈরি হচ্ছে। সেইসব ব্যবসায়ীদের সাবধান করা হবে। তবে শুধু হাটতলা নয়, শহরের বিভিন্ন জায়গাতেই প্রতিদিন আবর্জনা জমে থাকে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। ভ্যাটগুলি উপচে পড়ে। আবর্জনা রাস্তায় এসে পড়ে। ফলে অসুবিধায় পড়তে হয় বাসিন্দাদের। আবর্জনার কারণে শহরে মশা, মাছির উপদ্রবও বাড়ছে। -নিজস্ব চিত্র