নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: উল্টোডাঙায় বিধাননগর স্টেশন লাগোয়া এবং খালপাড় বরাবর তৈরি হয়েছে বাসন্তী কলোনি। এবার সেই বাসন্তী কলোনির একাংশে ‘বাংলার বাড়ি’ তৈরির উদ্যোগ নিল কলকাতা পুরসভা। উল্টোডাঙা খালপাড়ের উল্টোদিকে থাকা বাসন্তী কলোনির ১৩টি পরিবারের জন্য আপাতত একটি চারতলা বহুতল নির্মাণ করা হবে। সম্প্রতি সেই কাজের শিলান্যাস হয়েছে।
ঠিক হয়েছে, সাড়ে ৩০০ বর্গফুটের মোট ১৩টি ফ্ল্যাট বানানো হবে। বর্তমানে এই ১৩টি পরিবারের বাসিন্দারা বাসন্তী কলোনির একটি অংশে খালধার লাগোয়া পূর্বালি পার্কের সামনে ঘর বানিয়ে বসবাস করেন। তাই ওই জায়গাটিকে বাসন্তী কলোনি পূর্বালি পার্ক নামেই ডাকা হয়। ওই জমিটি রাজ্য সরকারের অধীনে। তাই সেখানে ‘বাংলার বাড়ি’ নির্মাণের ক্ষেত্রে কোনও জটিলতা নেই।
কিন্তু বিধাননগর স্টেশন বরাবর এই বস্তির যে বড় কলোনি রয়েছে, সেই জায়গাটি রেলের আওতাভুক্ত। তাই সেখানে কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না রাজ্যের পক্ষে। তবে, পূর্বালি পার্কের এই নির্মাণ ঘিরে আশায় বুক বাঁধছেন বস্তির বাসিন্দারা। কারণ, বাম আমলে একটা সময় বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুড়ে ছারখার হয়ে গিয়েছিল বাসন্তী কলোনি। তারপরে নতুন করে ঘর বানিয়ে দেওয়া হয় সেখানকার বাসিন্দাদের। কিন্তু বামেরা এঁদের স্থায়ী পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে পারেনি বলেই অভিযোগ। গত ১৫-১৬ বছরে একাধিকবার আগুন লেগেছে এই কলোনিতে। এবার ফ্ল্যাট নির্মাণ হয়ে গেলে অগ্নিকাণ্ডের আশঙ্কা কমবে বলে মনে করছেন সেখানকার বাসিন্দারা।
স্থানীয় ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার শান্তিরঞ্জন কুণ্ডু বলেন, নিজেদের ঘর পাওয়া, এটা ওঁদের কাছে একটা স্বপ্ন। রোজ জলের লাইনে দাঁড়ানো কিংবা শৌচাগারে জন্য লাইন দেওয়ার ভোগান্তি শেষ হবে। নিজেদের ফ্ল্যাট, নিজস্ব জলের লাইন, ব্যবহারের জন্য নিজস্ব শৌচালয়- প্রতিটি পরিবার নিজের মতো করে সুস্থভাবে বাঁচবে। সেই সঙ্গে বস্তির ব্লক মিটারের নানা সমস্যা রয়েছে। একসঙ্গে কারেন্টের বিল আসে। কে কম ব্যবহার করছে, বা কে বেশি কারেন্ট পোড়াচ্ছে, সেটা বোঝা যায় না। সবাইকেই একসঙ্গে মোটা টাকা বিদ্যুতের বিল মেটাতে হয়। নিজস্ব ফ্ল্যাট হলে নিজস্ব বিদ্যুৎ সংযোগ হবে। যে যেমন বিদ্যুৎ খরচ করবে, তেমন বিল দেবে। আর কোনও ঝামেলা থাকবে না। শান্তিরঞ্জন আরও বলেন, বাসন্তী কলোনির মূল বাসিন্দারা রেললাইন লাগোয়া যেখানে বর্তমানে থাকেন, সেখানেও সরকার জমি পেলে ‘বাংলার বাড়ি’ গড়ে দিতে প্রস্তুত। কিন্তু রেল জমি দিচ্ছে না। তাই পুরসভা সেখানে কিছু করতে পারছে না। -নিজস্ব চিত্র