গোঘাট ব্লকে কাগজ কুড়ানিদের ‘সমাজ বন্ধু’ স্বীকৃতি প্রশাসনের
বর্তমান | ০৪ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: কাগজ কুড়ানিদের ‘সমাজ বন্ধু’ হিসেবে স্বীকৃতি দিল প্রশাসন। গোঘাট-১ ব্লকে এমন ২১ জন কাগজ কুড়ানিকে দায়িত্ব দেওয়া হল বর্জ্য সংগ্রহের কাজেও। তাঁরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাঁশি বাজিয়ে বর্জ্য সংগ্রহ করবেন। তাঁদের কাজ নিয়ে যাতে কারও সন্দেহ দানা না বাঁধে, সেই জন্য বিডিও-র স্বাক্ষর করা সচিত্র পরিচয়পত্র ব্লক প্রশাসনের তরফে তাঁদের তুলে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক বর্জন দিবস থেকেই তাঁদের কাজের সূচনা হয়েছে। এদিন গোঘাট-১ বিডিও সম্রাট বাগচী, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিজয় রায়, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ক কর্মাধ্যক্ষ প্রদীপ রায় সহ অনেকের নেতৃত্বে সচেতনতা মূলক র্যালি হয়। বাজারের ব্যবসায়ীদের তাঁরা সচেতন করেন। পাশাপাশি সমাজ বন্ধুদের সঙ্গে পরিচয়ও করানো হয়।
কর্মাধ্যক্ষ প্রদীপবাবু বলেন, আমাদের লক্ষ্য এলাকাকে পরিছন্ন রাখা। সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণির কিছু মানুষ কাগজ কুড়ানির কাজ করে নীরবে পরিছন্নতার কাজ করেন। সেই জন্য তাঁদের মাধ্যমেই বাড়ি বাড়ি বর্জ্য সংগ্রহের কাজে আমরা জোর দিয়েছি। ২১ জনকে আপাতত নিয়োগ করা হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতি ও পঞ্চায়েতের যৌথ উদ্যোগে তাঁদের কাজে নজরদারি রাখা হবে। তারসঙ্গে তাঁদের উৎসাহ ভাতা দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গোঘাট-১ ব্লকে সাতটি পঞ্চায়েত রয়েছে। প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যে সব পঞ্চায়েতকেই তিনটি করে ই-কার্ট গাড়ি দেওয়া হয়েছে। সেই গাড়ির সাহায্যেই জঞ্জাল সংগ্রহের দায়িত্ব তাঁদের দেওয়া হয়েছে। এজন্য প্রশাসন তাঁদের একটি করে সচিত্র পরিচয়পত্র দিয়েছে। গোঘাট-১ বিডিও তাতে স্বাক্ষর করেছেন। যদিও ওই পরিচয়পত্র শুধুমাত্র গোঘাট-১ ব্লকেই কার্যকরী হবে। বিডিও বলেন, আপাতত সমাজ বন্ধুরা বাড়ি থেকে প্লাস্টিক বা কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ করবেন। শীঘ্রই গোঘাট-২ ব্লক এলাকায় একটি প্লাস্টিক ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প চালু হওয়ার কথা। সেই প্রকল্পে সংগ্রহ করা প্লাস্টিকগুলি ব্যবহার করা হবে। এরফলে আমাদের এলাকা অনেকটাই পরিছন্ন হবে বলে আশা করছি। ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের নিয়মিত বর্জ্য দেওয়ার জন্যও আহ্বান জানানো হয়েছে।
সমাজবন্ধু সুভাষ দাস বলেন, আমরা বোতল কুড়ানোর কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন জায়গাতেই হেনস্তার শিকার হয়েছি। এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য প্রশাসন আমাদের পরিচয়পত্র, পোশাক, বাঁশি দিয়েছে। কাজের ব্যবস্থা হয়েছে। এতে আমাদের সম্মান বেড়েছে। তবে প্রশাসন আমাদের রোজগারের বিষয়টি নিশ্চিত করবে বলে আমরা আশাবাদী।
উল্লেখ্য, এদিন আরামবাগ মহকুমাজুড়েই প্লাস্টিক বর্জন দিবস পালিত হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে বাসিন্দাদের প্লাস্টিক ব্যবহার না করার জন্য বাসিন্দাদের সচেতন করা হয়। গোঘাট-১ ব্লকে স্কুল পড়ুয়াদের র্যালি হয়। ব্যবসায়ীদের নিয়মিত বর্জ্য সরবরাহ করার জন্য অঙ্গীকার করিয়েছে প্রশাসন। পাশাপাশি প্লাস্টিকের বিকল্প ব্যবহারের কথাও জানানো হয়েছে। -নিজস্ব চিত্র