বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে সহবাসের পর জেলে, যুবতীর চাপে চারহাত এক
বর্তমান | ০৪ জুলাই ২০২৫
সংবাদদাতা, বনগাঁ: বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস। প্রেমিকার অভিযোগ। সংশোধনাগারে প্রেমিক। কিন্তু প্রেমিকা নিজের অধিকার ছাড়েননি। তিনি প্রতিবন্ধী। হাঁটতে পারেন না। তাই মায়ের কোলে চেপে আদালতে আসতেন আইনি লড়াই লড়তে। অবেশেষে ৩৪ বছরের যুবতী জিতলেন। প্রেমিক বিয়ে করতে রাজি হলেন। জামিন পেয়ে তিনি সংশোধনাগার থেকে সোজা এলেন বিয়ের আসরে। পিঁড়িতে বসলেন। তরুণী কনের সাজে বসেছিলেন। ছিলেন পুরোহিতও। আদালত চত্বরে আইনজীবীর অফিসে বসল বিয়ের আসর। দু’তরফের আত্মীয়দের উলুধ্বনিতে মুখর বিবাহবাসর। তারপর ‘যদিদং হৃদয়ং মম, তদস্তু হৃদয়ং তব’। এক হল চারহাত।
বর-কনে পরস্পরের হাতে হাত রেখে অঙ্গীকার করলেন, ‘ভবিষ্যতে সুখে সংসার করব আমরা।’বনগাঁ থানা এলাকার বাসিন্দা পিউ দাস (নাম পরিবর্তিত)। তার সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচয় বাগদার বিশু দাসের (নাম পরিবর্তিত )। তাঁদের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। পিউ প্রতিবন্ধী। হাঁটতে অক্ষম। যদিও সেই প্রতিবন্ধকতা প্রেমের পথে বাধা হয়নি। প্রেমিকার বাড়ি নিয়মিত যেতেন বিশু। প্রেমিকাকে নিজের হাতে খাইয়ে পর্যন্ত দিতেন বলে জানা গিয়েছে। এরই মধ্যে ব্যবসার জন্য পিউয়ের নামে ৩০ হাজার টাকা লোন নেন বিশু। তারপর কয়েকদিনের জন্য যান বেপাত্তা হয়ে। কিছুদিন পর আসেন। তখন কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা তাঁর বাইকটি আটকে দেন। তবে বিশু তাঁদের হাত ছাড়িয়ে পালান। এরপর বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস ও বিয়ে করতে অস্বীকার করার অভিযোগ জানিয়ে পুলিসের দ্বারস্থ হন পিউ। পুলিস বিশুকে গ্রেপ্তার করে। আদালত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। তবে যাঁকে ভালোবেসে ছিলেন তাঁর শাস্তি চাননি পিউ। তাই সংশোধনাগারে গিয়ে দেখাও করেন। তারপর বিশু মত পরিবর্তন করেন। দু’জনে বিয়ে করবেন বলে ঠিক হয়। পিউ আদালতে জানান, তাঁদের মধ্যে মিটমাট হয়েছে। বিয়ে করতে প্রস্তুত তাঁরা। এরপর আদালত বিশুকে জামিনে মুক্তি দেয় বুধবার। আর বৃহস্পতিবার সংশোধনাগার থেকে সোজা বিয়ে করতে পৌঁছন বিশু। আইনজীবী নিবেদিতা ঘোষ দেবনাথ বলেন, ‘মেয়েটি সংশোধনাগারে গিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করে নিজের বিয়ে ঠিক করেছে। আমি চাই সুখে সংসার করুক।’