• পরিবেশ রক্ষায় মানুষকে সজাগ করতে গিয়ে তৃণমূল কর্মীর হাতে বেধড়ক মার খেলেন কলেজের অধ্যক্ষ
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৪ জুলাই ২০২৫
  • পরিবেশ রক্ষায় মানুষকে সচেতন করতে গিয়ে বিনময়ে অধ্যক্ষের কপালে জুটল তৃণমূল নেতার দাদার প্রহার। আতঙ্কে ও অসম্মানে চাকরি ছাড়তে চাইছেন চাপড়ার গভর্নমেন্ট জেনারেল ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শুভাশিস পাণ্ডে। এই ঘটনায় অভিযুক্তের নাম অজয় ঘোষ। তাঁর ভাই চাপড়া হাটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। অধ্যক্ষ আক্রান্ত হওয়ার পর তাঁকে চিকিৎসার জন্য চাপড়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আহত অধ্যক্ষ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চাপড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি সংবাদমাধ্যমের সামনে যন্ত্রণায় কেঁদে ফেলেন এবং বলেন, হয় তিনি বদলি নিয়ে নেবেন, নাহলে চাকরি ছেড়ে দেবেন।

    চাপড়ায় দীর্ঘদিন ধরেই দেখা যাচ্ছে, এক শ্রেণির মানুষ একাধিক সরকারি জায়গায় ও রাস্তার পাশে নয়ানজুলির ধারে ঝোপ-জঙ্গল সাফাই করে দিচ্ছে। ওই অধ্যক্ষের অপরাধ, সেই সব জায়গায় পরিবেশ রক্ষার জন্য মানুষকে সজাগ করতে বোর্ড লাগিয়েছিলেন। সেই বোর্ডগুলিকে ভেঙে দেওয়া হয় বলে তাঁর অভিযোগ। প্রতিবাদ করলে ওই অধ্যক্ষকে বেধড়ক মারধর করেন এক তৃণমূল কর্মীর দাদা! এই ঘটনার পর একটি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে তিনি কেঁদে ফেলেন। তাঁর অভিযোগ, অভিযুক্ত এলাকায় ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাঁকে ধরছে না।

    প্রসঙ্গত, চাপড়া কলেজের অধ্যক্ষ শুভাশিস পাণ্ডে মূলত কীটপতঙ্গ রক্ষা, তাদের বংশবিস্তার এবং কৃষিকাজের ফলন বৃদ্ধি নিয়ে গবেষণা করেন। পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষার জন্যে গোটা দেশ জুড়ে কাজ করেছেন। তিনি ২০২১ সাল থেকে প্রায় পাঁচ বছর ধরে চাপড়ায় কর্মরত ছিলেন। ওই এলাকাতেও যাতে কীটপতঙ্গ অবলুপ্তি না হয়, সেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। আর তাতেই নাকি বাধ সেধেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের একটি অংশ!

    এদিকে এই ঘটনার পর অভিযুক্ত অজয় ঘোষ বিষয়টি নিয়ে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন। তিনি বলেন, সেসময় তাঁর মানসিক অবস্থা ঠিক ছিল না। তিনি তখন পাগলের মতো হয়ে গিয়েছিলেন। সেজন্যই এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে দাবি করেন। যদিও বিরোধীরা বলছেন, ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়নজুলি ভরাট সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। শাসকদলের প্রভাব খাটিয়ে সরকারি জায়গা পরিষ্কার করে জবরদখল করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)