• তৃণমূলকে হঠাতে বিরোধীদের জোটবদ্ধ হওয়ার বার্তা দিলেন শমীক ভট্টাচার্য
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৪ জুলাই ২০২৫
  • অবশেষে সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি হলেন শমীক ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার সায়েন্স সিটিতে রাজ্যের গেরুয়া শিবির ঢাকঢোল পিটিয়ে তাঁর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেই অনুষ্ঠানে তাঁর হাতে সভাপতির শংসাপত্র তুলে দেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। রাজ্যের সিনিয়র নেতা শমীক ভট্টাচার্য সভাপতি পদে অভিষেক হতেই রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান। তিনি তৃণমূলকে রাজ্যের শাসন ক্ষমতা থেকে হঠাতে বাম ও কংগ্রেস সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে একজোট হওয়ার বার্তা দেন। দলের নেতাকর্মীদের মধ্যেও নতুন-পুরোনো ভেদ না করে সবাইকে নিয়ে চলার বার্তা দিয়েছেন। পাশাপাশি রাজ্যের সংখ্যালঘুদেরকে দেন সম্প্রীতির বার্তা।

    শমীক তাঁর ভাষণের শুরুতে গর্জে ওঠেন রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে। তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ নিয়েও সরব হন। এরপরই রাজ্যের শাসনক্ষমতা থেকে মমতাকে উৎখাতের লক্ষ্যে সম্মিলিত আন্দোলনের ডাক দেন। রাজ্যের বাম ও কংগ্রেসের উদ্দেশ্যে শমীক বলেন, ‘বাম, সিপিএম সবাইকে বলছি লড়াইয়ে আসুন। যার যা পতাকা আছে, কয়েকদিনের জন্য তুলে রাখুন। ভোট কাটার রাস্তা করে মমতাকে ফেরানোর চেষ্টা করবেন না।’

    তিনি রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উদ্দেশেও বার্তা দেন। ভোটমুখী শমীকের কণ্ঠে শোনা যায় সম্প্রীতির সুর। তিনি রাজ্যের সংখ্যালঘুদের উদ্দেশে বলেন, ‘বিজেপির লড়াই সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নয়। আমরা চাই, দুর্গাপুজোর মিছিল এবং মহরমের মিছিল একই সময়ে পাশাপাশি হেঁটে যাবে, কোনও সংঘর্ষ ছাড়া। বাংলাকে রক্ষা করতে হবে।’

    শমীক রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগকে হাতিয়ার করে বলেন, ‘রাজ্যে খোলা বাজারে বিকোচ্ছে চাকরি। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী জগন্নাথের কাছে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন। গণতান্ত্রিক কাঠামো মানেন না মুখ্যমন্ত্রী। আগে মমতাকে সরান, পরে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়বেন।’

    প্রসঙ্গত এতদিন ধরে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ অন্যান্য বিজেপি নেতারা যেভাবে হিন্দুত্ববাদী লাইনে দলের প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন, সেখানে  নবনির্বাচিত রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের এই ভারসাম্যের রাজনীতি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে যথেষ্ট চর্চা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি আসন্ন বিধানসভা ভোটকে পাখির চোখ করে বিজেপি তার রণকৌশল পরিবর্তন করতে চাইছে। একের পর এক নির্বাচনে ভরাডুবির পর গেরুয়া শিবিরের এবারের টার্গেট কি রাজ্যের সংখ্যালঘু ভোট?
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)