• বৈদ্যবাটিতে জোড়া ‘খুনে’র কিনারা, বোনের পরকীয়া সম্পর্কে ভাঙন! প্রেমিককে মারধর করায় দিদি ও সঙ্গীকে খুন?
    প্রতিদিন | ০৪ জুলাই ২০২৫
  • সুমন করাতি, হুগলি: পরকীয়া সম্পর্কে ভাঙন। আর সেই প্রতিহিংসা থেকেই যুগলকে ‘খুন’। হুগলির বৈদ্যবাটিতে যুগল খুনের ঘটনার কিনার করল পুলিশ। গ্রেপ্তার হল তরুণীর প্রাক্তন প্রেমিক। বৃহস্পতিবার ভোররাতে বৈদ্যবাটির এক ভাড়াবাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছিল মনীশ ভাদুড়ী(৩৫) ও অপর্ণা মাঝির(৩২) মৃতদেহ। ঘটনার দেড়দিনের মধ্যে দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করলেন তদন্তকারীরা। ধৃতদের নাম অর্জুন পাশোয়ান ও নাসিরুদ্দিন শেখ।

    ৩৫ বছরের মণীশ ভাদুড়ি এবং ৩২ বছরের অপর্ণা মাঝি বৈদ্যবাটি পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সীতারাম বাগান এলাকার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। গত তিনবছর ধরে সেখানেই থাকতেন তাঁরা। স্থানীয়রা জানান, রাত তিনটে নাগাদ চিৎকার শুনতে পান তাঁরা। তারপর ওই বাড়িতে গিয়ে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় দুজনে পড়ে আছে। একজন ঘরের মধ্যে এবং অন্যজন ঘরের বাইরে। যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন। রাজার বাগানে মণীশের বাড়ির লোককে খবর দেন প্রতিবেশীরা। তাঁরাই পুলিশ ডাকে। পুলিশ এসে উদ্ধার করে নিয়ে যায় শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে। চিকিৎসকরা দুজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন।

    ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, অপর্নার ছোট বোন রিম্পা স্বামীকে ছেড়ে অর্জুন নামে ওই যুবকের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। হাওড়া চামরাইলের বাসিন্দা অর্জুন পাশোয়ান পেশায় গাড়িচালক। তারা রিম্পা ও অর্জুন তেলেঙ্গানায় কিছুদিন গিয়ে থেকেওছিলেন। পরে তারা আবার বাংলায় ফিরে আসেন। সম্প্রতি রিম্পা ওই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন বলে খবর। যদিও রিম্পার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে নাছোরবান্দা ছিলেন অর্জুন। এই অবস্থায় অপর্না অর্জুনকে বোনকে ‘বিরক্ত’ করতে বারণ করেছিলেন বলে খবর।

    ঘটনার তিনদিন আগে আবার বৈদ্যবাটিতে গিয়েছিলেন অর্জুন। সেখানে বচসা হয় অপর্নার সঙ্গে। প্রকাশ্যে অপর্না তাঁকে চড়-থাপ্পড় মারেন বলে অভিযোগ। এই অপমান ও সম্পর্কে ভাঙনের বদলা নিতেই সম্ভবত খুনের পরিকল্পনা করে অর্জুন, এমনই মনে করছেন তদন্তকারীরা। ঘটনার দিন, বুধবার শিয়ালদহ থেকে ছুরি কিনে বৈদ্যবাটিতে গিয়েছিলেন অর্জুন। রাত পর্যন্ত ওই এলাকায় ঘাপটি মেরে বসে থাকেন। ভোররাতে তিনি অপর্ণার ঘরে ঢোকেন। ঘুমন্ত অবস্থায় অপর্ণা ও মনীশের ওপরে ছুরি চালান তিনি। শরীরের বিভিন্ন জায়গা ফালাফালা করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

    পুলিশ তদন্তে নেমে এই দু’জনের নাম জানতে পারেন। পুলিশ ওই দু’জনকে ধরার ফাঁদ পাতে। দুটি টিম তৈরি হয়। একটি জগদীশপুর তদন্ত কেন্দ্রের চামরাইলে পাঠায় যায়। অপর দলটি যায় মহেশতলায়। স্থানীয় পুলিশের সাহায্য নিয়ে দু’জনকে গ্রেফতার করেন তদন্তকারীরা। আজ শুক্রবার ধৃতদের আদালতে তোলা হবে বলে খবর।
  • Link to this news (প্রতিদিন)