• নেই মাঝি, নেই সেতু, নিজেরাই দড়ি টেনে বছরের পর বছর নদী পারাপার করছেন মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীরা...
    আজকাল | ০৫ জুলাই ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: খেয়াঘাটে প্রায়ই উপস্থিত থাকেন না মাঝি। তবুও গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দিতে হবে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। তার তাগিদেই জীবন বিপন্ন করে মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা ব্লকের গুমানি ঘাটে গুমানি নদী পার হওয়ার জন্য নিজেরাই নৌকার উপর দাঁড়িয়ে দড়ি টেনে নৌকা এগিয়ে অপর পাড়ে উঠছেন স্বাস্থ্য কর্মীরা। 

    জানা গিয়েছে এই ঘটনা নতুন নয়। গত প্রায় ১২ বছর ধরে এভাবেই নয় জনের কাছাকাছি স্বাস্থ্যকর্মী এভাবেই যাতায়াত করে ফরাক্কা ব্লকের ডিয়ার ফরেস্ট গ্রাম ছাড়াও শিকারপুর, নিমতলা এবং বাঁকা এলাকায় বসবাসকারী কয়েক হাজার পরিবারের কাছে রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিচ্ছেন। অধিকাংশ সময় ঘাটে মাঝি না থাকায় এবং পারাপারের জন্য কোনও সেতু না থাকায় এটাই এখন দস্তুর বলে জানাচ্ছেন এলাকাবাসীরা। 

    বিভা মণ্ডল নামে একজন দ্বিতীয় এএনএম কর্মী জানান, 'রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য দপ্তর গর্ভবতী মা এবং শিশুদের জন্য যে নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচি চালায় সেই সমস্ত পরিষেবা ও অন্যান্য আরও পরিষেবা গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে আমরাই পৌঁছে দিয়ে আসি। কিছু কিছু গ্রামে যেতে হলে আমাদের গুমানি ঘাট পার হতেই হবে। না হলে অনেক ঘুরে ওই গ্রামগুলিতে পৌঁছতে হবে। ঘাটে একজন মাঝি থাকার কথা থাকলেও বয়স এবং অসুস্থতার কারণে বেশিরভাগ সময় তিনি অনুপস্থিত থাকেন।' 

    এই বিষয়টি বিবেচনা করেই এলাকার কিছু বাসিন্দা গুমানি ঘাটের দুই প্রান্তে দড়ি বেঁধে রেখেছেন। আশা কর্মীরা বলেন, নৌকায় দাঁড়িয়ে সেই দড়ি টেনেই তাঁরা নদী পারাপার করছেন। এরপর প্রায় এক কিলোমিটার কাদা রাস্তা খালি পায়ে হেঁটে তাঁদের পরিষেবা পৌঁছে দিতে হয়। 

    আশঙ্কা প্রকাশ করে আশা কর্মীরা জানান, বর্ষায় গুমানি নদীর জলস্তর খুব বেড়ে যায়। এমনকী পারাপারের সময় একাধিকবার তাঁদের হাত থেকে দড়ি ফস্কে গিয়ে নৌকা স্রোতের টানে ভেসে গিয়েছে। এলাকার লোকজন কোনও ভাবে তাঁদের উদ্ধার করে পারে পৌঁছে দিয়েছেন।
  • Link to this news (আজকাল)