বিক্ষোভকারী চাকরিহারাদের পুলিশের নোটিশ নিয়ে বড় নির্দেশ হাইকোর্টের
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৫ জুলাই ২০২৫
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন রাজ্যের ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী। তারপর থেকেই আন্দোলনে নেমেছেন চাকরিহারারা। যোগ্যদের নিয়োগের দাবিতে দীর্ঘদিন বিকাশ ভবনের সামনে ধর্নার কর্মসূচি নিয়েছিলেন চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশ। সেই সময় বিকাশ ভবন চত্বরে তুমুল অশান্তির ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে একের পর এক চাকরিহারা আন্দোলনকারীকে নোটিশ পাঠাচ্ছে বিধাননগর উত্তর থানা। আদালত পুলিশকে ধীর গতিতে চলার নির্দেশ দিলেও তা মানা হচ্ছে না, এই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে অভিযোগ দায়ের করেছেন চাকরিহারা দুই শিক্ষক।
শুক্রবার সেই মামলার শুনানি ছিল। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘যিনি বা যাঁরা পুলিশের নোটিশ পেয়েছেন, তাঁরা তা খারিজ করার জন্য আদালতে আবেদন জানাতে পারবেন। পৃথক ভাবে বা একসঙ্গেও আইনজীবী মারফত ওই আবেদন জানাতে পারবেন।’ মামলাকারীদের আইনজীবী এই ইস্যুতে দায়ের হওয়া মূল এফআইআর খারিজের আবেদন জানান। যদিও আদালত জানিয়ে দিয়েছে, পুলিশের নোটিশ পাঠানো নিয়ে আবেদনের শুনানির পরে তা বিবেচনা করে দেখা হবে।
মামলাকারী দুই শিক্ষক চিন্ময় মণ্ডল ও সঙ্গীতা সাহার বক্তব্য, ‘আমরা অপরাধী নই। শুধু অধিকার চেয়ে বিক্ষোভ করেছিলাম।’ তাঁদের হয়ে আদালতে সওয়াল করে আইনজীবী জানান, মামলা দায়ের হওয়ার পরেও এখনও পর্যন্ত ৮-৯টি নোটিশ পাঠিয়েছে পুলিশ। একথা শুনে বিচারপতি বলেন, ‘যাঁরা পুলিশি হয়রানির শিকার বলে মনে করছেন, প্রত্যেকেই যেন নিজ নিজ মামলা দায়ের করেন অথবা সম্মিলিতভাবে একজন আইনজীবীর মাধ্যমে মামলা করেন। তবে অন্যের মামলায় যুক্ত হওয়া যাবে না।’
আন্দোলনরত শিক্ষকদের অভিযোগ, প্রতিবাদে অংশ নেওয়ায় তাঁদের একের পর এক নোটিশ পাঠাচ্ছে পুলিশ। এমনকী কখনও বাড়িতে, কখনও বা স্কুলে গিয়ে, পড়ুয়াদের সামনেই নোটিশ দেওয়া হচ্ছে। এই পরিস্থিতিকে ‘সামাজিক অবক্ষয়’ বলেই চিহ্নিত করছেন তাঁরা। শিক্ষকদের পক্ষের আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার অভিযোগ করেন, ‘বোর্ড আদালতের নির্দেশের পরেও শোকজ নোটিশ পাঠিয়ে যাচ্ছে।’ এর জবাবে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘আমার নির্দেশ অমান্য করে থাকলে, ব্যবস্থা নিতে আমি বাধ্য হব।’ এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী আগস্ট মাসে হবে বলে জানিয়েছে আদালত।