• ‘কোন ভরসায় রাখব?’, সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলার হিড়িক, শোরগোল পশ্চিম মেদিনীপুরে
    এই সময় | ০৫ জুলাই ২০২৫
  • দু’সপ্তাহে দুই কোটি। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থানার অধীন গৌরা সমবায় সমিতি তথা সমবায় ব্যাঙ্কের গ্রাহকরা তুলে নিচ্ছেন টাকা। নিজেদের টাকা নিজেরা তুলতেই পারেন। তবে, এত কম সময়ে এরকম টাকা তুলে নেওয়ার হিড়িক কেন? গ্রাহকদের একাংশ বলছেন, ‘কোন ভরসায় টাকা রাখব? যেখানে নির্বাচনের জন্য বিরোধীদের মনোনয়নই করতে দেওয়া হলো না। সেখানে আমাদের টাকা যে সুরক্ষিত থাকবে, তার কী নিশ্চয়তা আছে।’

    গত ১৭ ও ১৮ জুন এই সমবায় সমিতির নির্বাচনের মনোনয়ন পর্ব ছিল। আর মনোনয়নকে ঘিরেই ধুন্ধুমার বেঁধে যায় শাসক-বিরোধী দুই গোষ্ঠীর মধ্যে। পুলিশের তরফেও বিরোধীদের আটকানো হয় বলে অভিযোগ। বিগত সময়ে এই সমবায় ব্যাঙ্ক বামেদের দখলে থাকলেও, এ বার একজন বিরোধী প্রার্থীকেও নমিনেশন তুলতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এমনকী বাম জোটের দুই প্রার্থীকে থানায় তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলেও সিপিএমের অভিযোগ। শেষমেশ এই ব্যাঙ্কের ৫৩টি আসনেই কেবলমাত্র তৃণমূল প্রার্থীরাই নমিনেশন বা মনোনয়ন জমা দেন বলে দাবি।

    এই ঘটনার পর থেকেই অর্থাৎ ১৯ জুন থেকেই ওই সমবায় ব্যাঙ্কের গ্রাহকরা দলে দলে গিয়ে নিজেদের সেভিংস অ্যাকাউন্টে থাকা টাকা তুলে নিচ্ছেন। লাইন দিয়ে টাকা তোলার হিড়িক দেখে মাথায় হাত সমবায় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের! বাধ্য হয়েই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নিয়ম করেছেন, একসাথে কুড়ি হাজার টাকার বেশি তোলা যাবে না। যদিও, কর্তৃপক্ষের সেই দাবি মানতে রাজি নন গ্রাহকরা।

    সমবায় ব্যাঙ্কের গ্রাহক অমর পাখিরা, বানেশ্বর রানারা বলেন, ‘আতঙ্কে আমরা টাকা তুলে নিচ্ছি। কোন ভরসায় টাকা রাখব? যেখানে বিরোধীদের নমিনেশনই তুলতে দেওয়া হয়নি। নমিনেশনকে ঘিরে মারধর, অশান্তি হয়। সেখানে আমরা আমাদের টাকা কোন ভরসায় গচ্ছিত রাখব? আমাদের টাকা যে সুরক্ষিত থাকবে, তার কোন নিশ্চয়তা নেই।’

    ব্যাঙ্কের ম্যানেজার সৈকত জানা বলেন, ‘এটা ঠিক যে গ্রাহকদের মধ্যে একটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। তাই তাঁদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করলেও অনেকেই মানছেন না। ১৯ জুনের পর থেকে শুক্রবার (৪ জুলাই) অবধি ২ কোটি টাকার বেশি তুলে নেওয়া হয়েছে।’ জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ তথা রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক আশিস হুদাইত বলেন, ‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’

  • Link to this news (এই সময়)