বোলপুরে স্কুলের মধ্যে ছাত্রীর উপর ব্লেড নিয়ে হামলা, ব্যাপক চাঞ্চল্য
বর্তমান | ০৫ জুলাই ২০২৫
সংবাদদাতা, বোলপুর: শতাব্দীপ্রাচীন বোলপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর উপর অতর্কিত হামলার অভিযোগ উঠল একাদশের দুই ছাত্রীর বিরুদ্ধে। শুক্রবার দুপুরে ক্লাস চলাকালীন এই ঘটনাটি ঘটেছে। স্কুলের বাথরুমে পিছন থেকে আচমকাই তার উপর এই আক্রমণ করা হয়। ব্লেড বা ধারালো কিছু দিয়ে ছাত্রীর হাত কেটে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আক্রান্ত ছাত্রীকে স্কুলের শিক্ষকদের রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনার জেরে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে ওই ছাত্রী। স্কুল কর্তৃপক্ষ ঘটনার কথা অভিভাবককে জানায়। পরিবারের লোকজন তাকে বোলপুর মহকুমা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করেন। এই ঘটনায় স্কুলের ভূমিকায় প্রশ্ন উঠেছে। এত বড় ঘটনার পরও পুলিসকে খবর না দেওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন অভিভাবকরা।
ছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিনের মতো এদিনও স্কুলে যায় বোলপুরের লায়েকবাজারের ওই ছাত্রী। আতঙ্কিত ওই ছাত্রী জানিয়েছে, বাথরুমে প্রথমে তার চোখ-মুখ চেপে ধরে মারধর করা হয়। ব্লেড বা ধারালো কিছু দিয়ে তার হাত কেটে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার কথা কাউকে জানালে প্রাণে মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। এরপর ওই ছাত্রী কোনওক্রমে বাথরুম থেকে ছুটে এসে স্কুলের শিক্ষিকাদের জানায়। এই ঘটনায় কার্যত মুখ কুলুপ এঁটেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
স্কুল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবক থেকে সাধারণ মানুষ। তাঁদের দাবি, এত বড় ঘটনা গোপন রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। জখম ছাত্রীকে দীর্ঘক্ষণ শিক্ষকদের রুমে বসিয়ে রেখে প্রাথমিক চিকিৎসার কোনও উদ্যোগও নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। অভিভাবক স্কুলে এসে মেয়েকে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখেন। তিনি মেয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, স্কুলে যদি এমন ঘটনা ঘটে তাহলে ছাত্রীদের নিরাপত্তা কোথায়? আপাতত ওর চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত আছি। মেয়ে সুস্থ হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে ভাবব।
অভিভাভকদের অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। সংবাদ মাধ্যমে মুখ না খোলার জন্য শিক্ষিকাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। এবিষয়ে প্রধান শিক্ষিকা তৃষ্ণা কুণ্ডুকে ফোন করা হলে তিনি তা ধরেননি। মেসেজেরও উত্তর দেননি। স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতি তথা সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, আমি এই মুহূর্তে কলকাতায় রয়েছি। তবে বিষয়টি শুনেছি। স্কুল কর্তৃপক্ষকে যথাযথ তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছি। আমিও চাই সত্য ঘটনা সামনে আসুক।