• আজ দুপুরে রাজভোগ খেয়ে রথে চড়বেন জগন্নাথদেব
    বর্তমান | ০৫ জুলাই ২০২৫
  • সংবাদদাতা, হলদিয়া: উল্টোরথের তোড়জোড় শুরু হয়েছে মহিষাদলে। আজ, শনিবার দুপুরে গুণ্ডিচাবাটিতে রাজভোগ খেয়ে রথে চড়বেন রাজবাড়ির কুলদেবতা মদনগোপালজিউ, রাজরাজেশ্বর এবং জগন্নাথদেব। মহিষাদলের রথ গোপালজিউর রথ হিসেবে পরিচিত। এখানে তাঁর সঙ্গী হন জগন্নাথদেব। গুণ্ডিচাবাটি থেকে পালকি চেপে দেবতারা আসবেন রথে।

    রাজবাড়ির প্রবীণ কর্মী স্বপন চক্রবর্তী বলেন, উল্টোরথেও একসময় দারুণ ধুমধাম হতো। রাজবাড়িতে বহু রীতি রয়েছে। এখনও কিছু রীতি পালিত হয়। মহিষাদলের রথযাত্রায় সমস্ত রীতিনীতি কিন্তু কুলদেবতা মদনগোপালজিউ কেন্দ্রিক। আজ থেকে ৩৫-৪০ বছর আগে উল্টোরথে গোপালজিউ ও জগন্নাথদেব যখন রাজবাড়ি ফিরতেন, তখন পরপর দু’বার কামান দাগা হতো। প্রথমে রথ থেকে নামতেন গোপালজিউ ও রাজরাজেশ্বর। তাঁদের পালকিতে চাপিয়ে রাজবাড়ির ফটকে প্রবেশ করানোর সময় একবার তোপধ্বনি হতো। এরপর জগন্নাথদেব আসতেন পালকি চেপে। তখন আর একবার তোপধ্বনি হতো। এখন কামান থাকলেও তোপধ্বনি হয় না। বাজি-পটকা ফাটিয়ে রীতি মানা হয়। রাজবাড়িতে বছরে পাঁচবার কামান দাগা হতো। দুর্গাপুজোয় সন্ধিপুজোর সময়, উল্টোরথে, সাধারণতন্ত্র দিবসে, স্বাধীনতা দিবসে এবং বড় রাজাবাবু দেবপ্রসাদ গর্গের জন্মদিন উপলক্ষ্যে। এছাড়া, গোপালজিউ মন্দিরে ফিরলে রাধার মানভঞ্জনের অনুষ্ঠান খুবই চিত্তাকর্ষক। তা দেখতে আজও দর্শনার্থীদের ভিড় জমে। রথের সময় গোপালজিউ মাসিরবাড়ি যান। মন্দিরে তখন রাধা থাকেন। তাই গোপালজিউ ফিরলে দরজা আটকে রাখেন রাধা। বেশ মজাদার ওই অনুষ্ঠান চলে আধঘণ্টা ধরে। গোপালজিউকে বাইরে বসিয়ে রেখে রাজপাখার বাতাস দেওয়া হয়। এরপর জগন্নাথদেব মন্দিরে এসে রাধার মানভঞ্জন করেন। তবেই গোপালজিউর মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি মেলে। রথের সময় প্রতিদিন গুণ্ডিচাবাটি থেকেই গোপালজিউর ভোগ নিয়ে গিয়ে নিবেদন করা হয়। সেই ভোগে প্রতিদিন অবশ্যই রাখতে হয় নোটেশাক ভাজা, ছানার তরকারি ও পায়েস। এগুলি গোপালজিউর মেনু। এবার গুণ্ডিচাবাটিতে রথের সময় দুপুরে ও রাতে প্রতিদিন কয়েক হাজার ভক্ত ও দর্শনার্থীকে ভোগ প্রসাদ খাওয়ানো হয়েছে।বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী বলেন, রথের কয়েকদিনে প্রায় ২০ হাজার মানুষের মধ্যে পোলাও, খিচুড়ি এবং ভোগ প্রসাদ বিতরণ করা হয়েছে। আজ উল্টোরথে যাতে কোনও গন্ডগোল না হয়, সেজন্য প্রশাসন সতর্ক রয়েছে। রথ উপলক্ষ্যে মেলাও বেশ জমে উঠেছে। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)