• দেনার দায়ে আত্মঘাতী কাকা ও ভাইপো, উদ্ধার সুইসাইড নোট
    বর্তমান | ০৫ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ঘরের ভিতর উদ্ধার হল কাকা ও ভাইপোর মৃতদেহ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিসের অনুমান, বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন তাঁরা। মৃতদের নাম মৃণাল বোস (৭৫) ও নীলাঞ্জন বোস (৫০)। শুক্রবার আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা এলাকার পটলডাঙা স্ট্রিটে এই ঘটনা ঘটেছে। আত্মহত্যার খবর ছড়াতেই এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। সন্ধ্যায় ঘরের দরজা ভেঙে তাঁদের দেহ উদ্ধার করেছে পুলিস। সুইসাইড নোট দেখে পুলিস মনে করছে, বাজারে লক্ষাধিক টাকা দেনা হয়ে গিয়েছিল তাঁদের। সেই ঋণের চাপেই দু’জনে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, পটলডাঙা স্ট্রিট এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন কাকা ও ভাইপো। ভাইপো নীলাঞ্জন বোস কলকাতা পুরসভা দালালির কাজ করতেন বলে জানা গিয়েছে। আর বৃদ্ধ কাকা বাড়িতে থাকতেন। কাজকর্ম করতেন না। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাইপোর রোজগারও ইদানিং ভালো হচ্ছিল না। অগত্যা দিন চালানোর জন্য বাজারে ধার করা ছাড়া কোনও উপায় ছিল না বোস পরিবারের। অল্প অল্প করে ধার নিতে গিয়ে বাজারে পাঁচ লক্ষ টাকারও বেশি ধার হয়ে গিয়েছিল তাঁদের। সূত্রের খবর, বাড়িতে পাওনাদারদের আনাগোনাও শুরু হয়েছিল। এদিকে উপার্জন ভালো হচ্ছিল না নীলাঞ্জনের। তাই ধার নেওয়া টাকা কীভাবে ফেরত দেবে, তা নিয়ে চরম বিপাকে পড়ে গিয়েছিলেন কাকা-ভাইপো। 

    সুইসাইড নোট থেকে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতেই কাকা-ভাইপো মিলে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। রাতেই তাঁরা দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে বিষ খান। শুক্রবার সকাল থেকে দু’জনের কোনও সাড়া শব্দ পাচ্ছিলেন না প্রতিবেশীরা। বিকেল হতেই প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয়। তারপরেই তাঁরা আমহার্স্ট থানায় খবর দেন। পুলিস এসে দেখে, দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করা রয়েছে। এরপরই দরজা ভেঙে পুলিস ভিতরে ঢুকে দেখে, বিছানার উপর কাকা-ভাইপো অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে, চিকিত্সকরা দু’জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন।

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ি থেকে একটি বিষের শিশি উদ্ধার হয়েছে। সেই বিষ খেয়েই তাঁরা আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অনুমান পুলিসের। এর পাশাপাশি ওই ঘর থেকেই একটি সুইসাইড নোটও পাওয়া গিয়েছে বলে খবর। জানা গিয়েছে, সেই নোটে লেখা রয়েছে, দেনার দায়েই তাঁরা আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।  নিজস্ব চিত্র 
  • Link to this news (বর্তমান)