• ডিএ-র দাবিতে কর্মবিরতি সরকারি কর্মীদের, বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৫ জুলাই ২০২৫
  • শুক্রবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টে কর্মবিরতিতে পালন করলেন সরকারি কর্মীদের একাংশ। বকেয়া ডিএ বা বকেয়া মহার্ঘ্য ভাতার দাবিতে তাঁদের এই আন্দোলন। রাজ্য সরকারের প্রতি কর্মচারিদের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে অবিলম্বে তাঁদের ২৫ শতাংশ ডিএ মেটাতে হবে। এই আন্দোলন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিল রাজ্য কোষাগার থেকে বেতন প্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারি-শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী যৌথ মঞ্চ। এছাড়া অংশ নিতে দেখা যায় সিপিএম নেতা তথা আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যকেও। আন্দোলনকারী কর্মীদের দাবি, রাজ্য সরকারকে সর্বভারতীয় মূল্যসূচকের নিরিখে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দিতে হবে।

    প্রসঙ্গত গত ১৬ মে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, ছয় সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ২৫ শতাংশ ডিএ মেটাতে হবে। ইতিমধ্যে গত ২৭ জুন সেই সময়সীমা শেষও হয়ে গিয়েছে। অথচ রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত শীর্ষ আদালতের সেই নির্দেশ পালন করেনি। এরপরই বিষয়টি নিয়ে ফের সরব হয়েছেন সরকারি কর্মচারীরা। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এমনকি তাঁরা বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থও হয়েছেন। পাশাপাশি শুক্রবার কর্মবিরতি পালন করেন সরকারি কর্মীরা।

    যদিও ডিএ নিয়ে রাজ্যের যুক্তি, ডিএ কোনও মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে না, বরং তা ‘ঐচ্ছিক’। তাছাড়া কেন্দ্র-রাজ্যের আর্থিক কাঠামোও এক নয়। সুতরাং কেন্দ্রের হারে ডিএ দেওয়ারও কোনও দায় নেই রাজ্য সরকারের। ‘রোপা ২০০৯’ অনুযায়ী নিজস্ব নিয়মে ডিএ দেয় রাজ্য। অন্যদিকে, সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের পাল্টা যুক্তি, ডিএ যে আইন স্বীকৃত, সেটা সুপ্রিম কোর্ট মেনে নিয়েছে। তবে ডিএ সরকারি কর্মচারীদের মৌলিক অধিকার কিনা সেটা পরবর্তী শুনানিতে আদালত জানাতে পারে। তাই মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য অপেক্ষা করছেন তাঁরা।

    উল্লেখ্য, গত ১৬ মে শীর্ষ আদালত রাজ্যের সরকারি কর্মীদের ২৫ শতাংশ বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিলে রাজ্য সরকার তা অস্বীকার করেনি। তবে রাজ্যের আর্থিক সঙ্কটের বিষয়টিও তুলে ধরা হয়। সেজন্য রাজ্যের পক্ষ থেকে বকেয়া ডিএ মেটানোর জন্য আরও ছয়মাস সময় চাওয়া হয়। বলা হয়, বকেয়া ডিএ দিতে হলে রাজ্যের আর্থিক কাঠামো ভেঙে পড়বে। এরজন্য প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা আর্থিক দায়ভার চাপবে রাজ্যের উপরে। শুধুমাত্র ২৫ শতাংশ ডিএ মেটাতে গেলেই অতিরিক্ত ১০ হাজার কোটি টাকা অর্থের প্রয়োজন, যা ২০২৫-২৬ রাজ্য বাজেটে ধার্য হয়নি। ফলে বকেয়া ডিএ মেটাতে গেলে রাজ্যকে আরও ঋণ করতে হবে। আর সেই ঋণ নিতে গেলে কেন্দ্র সরকারের অনুমতির প্রয়োজন রয়েছে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)