২২৮ হেক্টরে রুই-কাতলার রাজত্ব, লক্ষ্য বড় মাছের বড় বাজার
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৫ জুলাই ২০২৫
রাজ্যে মাছ উৎপাদনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় এবার শুধু নিজের চাহিদা মেটাচ্ছে না পশ্চিমবঙ্গ, উল্টে বাইরের রাজ্যেও মাছ পাঠানো শুরু হয়েছে। বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ডের মতো প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতে এখন নিয়মিত রপ্তানি হচ্ছে বাংলার চিংড়ি সহ নানা রকম মিষ্টি জলের মাছ। এমনই তথ্য জানালেন রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী।
মন্ত্রী জানান, এখন রাজ্যে মাছের উৎপাদন এতটাই বেড়েছে যে, আগে যেখান থেকে মাছ আনা হতো, সেইসব রাজ্যের উপর নির্ভরতা অনেকটাই কমে গেছে। অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, গুজরাট, ওড়িশা কিংবা পাঞ্জাব থেকে আগে যে মাছ আমদানি হতো, এখন সেই পরিমাণ অনেকটাই কম। ভবিষ্যতে পুরোপুরি আমদানি বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে।
সরকারি হিসেব বলছে, ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ১ লক্ষ ৬২ হাজার টন মাছ রপ্তানি হয়েছে বিভিন্ন রাজ্যে। ২০২৪-২৫ সালে সেই পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ৭৮ হাজার টনে। শুধু পূর্ব ভারত নয়, মহারাষ্ট্রেও এখন পাঠানো হচ্ছে বাংলা থেকে মাছ।
রাজ্যের মৎস্য দপ্তর জানিয়েছে, গত এক দশকে রাজ্যে মাছের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। ২০২২-২৩ সালে উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ২০.৪৫ লক্ষ মেট্রিক টন। সারা দেশে মাছ উৎপাদনে পশ্চিমবঙ্গ এখন দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে, ঠিক অন্ধ্রপ্রদেশের পরে।
তবে সমস্যা এক জায়গায়। প্রায় ৩৩টি দেশি মাছ এখন রাজ্যে বিপন্ন বলে জানিয়েছেন মৎস্যমন্ত্রী। পুঁটি, ট্যাংরা, মৌরলা, শিঙি, মাগুরের মতো মাছ এখন আর আগের মতো সহজে পাওয়া যায় না। তাই এই মাছগুলির চাষ বাড়ানোর জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার।
একইসঙ্গে বড় জলাশয়ে বড় সাইজের রুই-কাতলা চাষের জন্যও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ২২৮ হেক্টরের বেশি জমিতে এই মাছের চাষ শুরু হয়েছে, যেখানে দেড় থেকে দুই কেজি ওজনের মাছ উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মন্ত্রী জানিয়েছেন, মাছচাষিদের জন্য নানা রকম সরকারি প্রকল্প চালু করা হয়েছে। নতুন প্রযুক্তি, খামার তৈরি, প্রশিক্ষণ — সবদিক থেকেই সহযোগিতা করা হচ্ছে। এর ফলে মাছচাষ এখন লাভজনক পেশা হয়ে উঠছে রাজ্যের বহু মানুষের কাছে।