শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: সন্ধ্যা নামলেই ওদের ভয়ে বুক দুরুদুরু বাসিন্দাদের। জলপাইগুড়ির জঙ্গল লাগোয়া গ্রাম ও বনবস্তির বাসিন্দাদের নিরাপত্তায় এবার ফেন্সিংয়ের আয়তন বাড়াতে চলছে বনদপ্তর। জলপাইগুড়ি বনবিভাগের অন্তর্গত ছয়টি রেঞ্জের ৬০ কিলোমিটার সোলার ফেন্সিং বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মরাঘাট, লাটাগুড়ি, চালসা, ডায়না-সহ ছ’টি রেঞ্জে এই সৌরবিদ্যুৎ চালিত বেড়া দেওয়া হবে। এতে হাতির হানাদারি অনেকটাই কমবে বলে মনে করছে বনদপ্তর।
জলপাইগুড়ি বনবিভাগের ডিএফও বিকাশ ভি বলেন, “জলপাইগুড়ি বনবিভাগের পক্ষ থেকে জঙ্গল সংলগ্ন ৬০ কিলোমিটার এলাকায় সোলার ফেন্সিং লাগানো হবে। ইতিমধ্যেই বনবস্তি ও বন সংলগ্ন এলাকায় সোলার ফেন্সিং করার জন্য সমীক্ষা করা হয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় আগেই হাতি আটকাতে ফেন্সিং লাগানো হয়েছিল। এর মধ্যে কিছু জায়গায় বিকল হয়ে রয়েছে। কোথায় কোথায় সোলার ফেন্সিং বিকল হয়ে রয়েছে, তা নিয়েও সমীক্ষা করা হয়েছে। আবার কোথায় কোথায় নতুন ফেন্সিং প্রয়োজন, তাও সমীক্ষা করে দেখা হয়েছে। সব মিলিয়ে ৬০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ফেন্সিং লাগানো হবে।” এতে হাতির হানাদারির ঘটনা অনেকটাই কমবে বলে মনে করছে বনদপ্তর।
বনদপ্তরের এই উদ্যোগে খুশি বন সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। কারণ, রাত হলেই কখনও একা কখনও আবার দল বেঁধে হাতি হানা দেয় বন সংলগ্ন এলাকায়। চাষের জমি, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কখনও হাতির হামলায় প্রাণও যায় বাসিন্দাদের। এই পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন থেকেই ফেন্সিং-এর দাবি জানিয়ে আসছিলেন বনাঞ্চল সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, বনদপ্তরকে খবর দিলে হাতি তাড়িয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু এভাবে আর কতদিন? ফলে হাতির তাণ্ডব নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে এলাকায়। বন দপ্তরের সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, যেখানে যেখানে ফেন্সিং দেওয়া রয়েছে সেখানে হাতির উপদ্রব অনেকটাই কম হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই ৬০ কিলোমিটার এলাকায় নতুন করে ফেন্সিং বসলে হাতির উপদ্রব অনেকটাই কমবে। বনাধিকারিক বিকাশ ভি জানান, সমীক্ষা শেষ হয়ে গিয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি ফেন্সিং লাগানোর কাজ শুরু করে দেবেন তাঁরা। এছাড়াও নজরদারিতেও জোর দেওয়া হয়েছে।