দেনায় জর্জরিত পরিবার, ঋণ মেয়ের শ্বশুড়বাড়ি থেকেও, মুর্শিদাবাদে ‘আত্মঘাতী’ মহিলা
প্রতিদিন | ০৫ জুলাই ২০২৫
অতুলচন্দ্র নাগ, ডোমকল: লাখ লাখ টাকার ঋণে জর্জরিত স্বামী। পাওনাদার থেকে ব্যাঙ্কের কর্মীরা কিস্তির জন্য বাড়িতে হানা দিচ্ছিলেন। স্বামীও বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার চাপ দিচ্ছিলেন স্ত্রীকে। এমনকী মেয়ের শ্বশুরবাড়ি কাছেও ঋণী হয়ে পড়েছিল পরিবার। তা নিয়ে মেয়ের সঙ্গেও ঝামেলা হয়। সেই ‘অত্যাচার’ সহ্য করতে না পেরে ‘আত্মঘাতী’ মহিলা। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের জলঙ্গিতে। মেয়ের মৃত্যুর জন্য জামাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে মহিলার বাবা।
মৃতের নাম আর্জুমান বিবি (৪৫)। স্থানীয় ঘোষপাড়া সর্বপল্লী উচ্চ বিদ্যালয়ের পার্শ্বশিক্ষিকা ছিলেন। শুক্রবার মৃতার বাবা নাজিমউদ্দিন সরকার মেয়ের বাড়িতে এসে ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। তিনি পুলিশে খবর পুলিশে খবর দেন। পুলিশ দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। মেয়ের মৃত্যুর জন্য জামাইকে দায়ী করে অভিযোগ জানিয়েছেন বাবা। এদিকে কয়েকদিন আগে থেকেই অভিযুক্ত জামাই পলাতক।
মৃতার স্বামী গোলাম কিবরিয়া একটি বেসরকারি বিদ্যালয় চালান। মহাজনের থেকে ঋণের পাশাপাশি তাঁর নামে প্রচুর টাকার ব্যাঙ্ক ঋণ রয়েছে। এই অবস্থায় তিনি ফের ৩৬ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মৃতার পরিবার। মহিলার বাবার অভিযোগ, ঋণ শোধের জন্য মেয়ের থেকে টাকা চাইতেন জামাই। অত্যাচার করতেন। তিনি বলেন, “মেয়ের সংসার বাঁচাতে বিভিন্ন সময় টাকা দিয়েছি। এমনকী গতবছরেও জমি বিক্রি করে ৮ লাখ টাকা দিয়েছি। মেয়ের নামে একটি জমি ছিল সেটাও বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। জামাইয়ের অত্যাচারেরই মেয়ে চলে গেল।”
স্থানীয়রা জানান ঋণ নিয়ে ঝামেলায় দিন চারেক আগে থেকেই বেপাত্তা মৃতার স্বামী গোলাম কিবরিয়া। এদিকে টাকার জন্য মহিলার মেয়ের সঙ্গেও ঝামেলা হয়। জলঙ্গি ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি জানান, “পরিবারটা এমনিতেই ঋণে জর্জরিত। তার উপরে নিজের মেয়ের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে গলায় ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে মেয়েটি।” এই ঘটনায় মৃতার বাবা নাজিমউদ্দিন মেয়ের মৃত্যুর জন্য জামাই গোলাম কিবরিয়া ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তবে এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।