ব্যক্তির চেয়ে দল বড়! দলীয় কার্যালয়ে নিজের বদলে পদ্মের ছবি টাঙানোর নির্দেশ শমীকের
প্রতিদিন | ০৫ জুলাই ২০২৫
রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: ব্যক্তির চেয়ে দল বড়! বঙ্গ বিজেপির ব্যাটন হাতে নিয়েই একথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন নয়া রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। এটা যে স্রেফ কথার কথা নয়, হাতেকলমে তার প্রমাণও দিলেন। দলীয় কার্যালয়ে মুরলি ধর সেন লেনে যেখানে সাংবাদিক সম্মেলন হয়, সেই ঘরের ব্যাকগ্রাউন্ডে নিজের ছবি লাগাতে গররাজি শমীক। বদলে টাঙানো হল দলীয় প্রতীক পদ্মের বড়সড় ফ্লেক্স।
রাজ্য় বিজেপির তরফে কোনও সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হলে তার ব্যাকগ্রাউন্ডে রাজ্য সভাপতির ছবির ফ্লেক্স থাকতে। এবার সেই রীতি ভাঙলেন শমীক সূত্রের খবর, নয়া রাজ্য সভাপতি সাফ জানিয়েছেন, মুখ নয়, প্রতীক বড়। ব্যাকগ্রাউন্ডে তাঁর ছবি থাকবে না। শুধু দলের প্রতীক থাকবে। সেই মতো শনিবার মুরলি ধর সেন লেনের পুরোনো রাজ্যদপ্তরে কনফারেন্স হলে পদ্ম প্রতীকের ফ্লেক্স লাগানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় নিরাপত্তারক্ষী নিতেও রাজি নন শমীক। এভাবেই সাধারণ কর্মীদের আরও কাছের হয়ে উঠতে চাইছেন বিজেপির নয়া রাজ্য সভাপতি। কিন্তু তারপরেও কি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কাঁটা উপড়ে বঙ্গ বিজেপিকে নতুন দিশা দেখাতে পারবেন শমীক? উত্তর পেতে অপেক্ষা করতেই হবে।
আসলে এই মুহূর্তে বঙ্গ বিজেপির সবচেয়ে বড় সমস্যা হল ‘গ্রুপবাজি’। বিজেপিতে অন্তত গোটা তিনেক বড় নেতার গোষ্ঠী সক্রিয়। এর বাইরেও মেজো, ছোট একাধিক গোষ্ঠী রয়েছে। কোন গোষ্ঠীর নেতাকে সভাপতি হিসাবে বেছে নেওয়া হবে, সেটা কেন্দ্রীয় নেতাদের জন্য একেবারে লাখ টাকার প্রশ্ন ছিল। কারণ কোনও এক গোষ্ঠী থেকে সভাপতি বাছলে বাকিদের মনঃক্ষুণ্ণ হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা ছিল। সেদিক থেকে দেখতে গেলে শমীক সর্বজনবিদিত মুখ। তাঁকে সভাপতি হিসাবে পেয়ে সব গোষ্ঠী হয়তো উচ্ছ্বসিত নয়, কিন্তু এটাও সত্যি যে শমীকের সভাপতি পদে বিশেষ আপত্তিও ছিল না কোনও গোষ্ঠীর। আসলে শমীকের সবচেয়ে বড় গুণ হল, দলের অন্দরে বিশেষ শত্রু নেই তাঁর। হয়তো দলের অনেকেই শমীকের উন্নতিতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু পালটা শমীক তাঁদের সঙ্গে শত্রুতা করতে যাননি। বলা হয়, রাজনীতিতে তিনিই সফল যিনি শত্রুকে নিজের কাছে রাখতে পারেন। সেই কাজটা শমীক ভালো পারেন বলেই বিজেপির অন্দরে জনশ্রুতি। সম্ভবত সে কারণেই রাজ্য বিজেপিতে সকলের কাছে ‘গ্রহণযোগ্য’ শমীককে ভরসা করেছেন মোদি-শাহ থেকে নাড্ডারা। য়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সেই কাজ পুরোদমে শুরু করে দিয়েছেন তিনি। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, ঐক্যের বার্তা তুলে ধরতেই নিজের বদলে দলীয় প্রতীকের ফ্লেক্স টাঙানোর সিদ্ধান্ত নিলেন শমীক ভট্টাচার্য।