• দুটো এফআইআর, তবু গ্রেফতার নন বেবি! তৃণমূলনেত্রীর শাস্তি চেয়ে মমতাকে খোলাচিঠি বামনেতার স্ত্রীর
    আনন্দবাজার | ০৫ জুলাই ২০২৫
  • তাঁর স্বামীকে মারধর এবং হেনস্থার ঘটনায় তৃণমূলনেত্রী বেবি কোলের বিরুদ্ধে দুটো এফআইআর দায়ের হয়েছে। যার মধ্যে একটি অভিযোগ করেছে বেবির দল তৃণমূল-ই। তা-ও গ্রেফতার হলেন না কেন তৃণমূলনেত্রী? এই প্রশ্ন তুলে এবং বেবির শাস্তি চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রীকে খোলাচিঠি দিলেন প্রহৃত প্রবীণ বাম নেতা অনিল দাস ওরফে ভীমের স্ত্রী সুস্মিতা দাস। তাঁর আবেদন, নিরপেক্ষ ভাবে যেন তাঁর স্বামীর উপর ‘আক্রমণের’ ঘটনায় ব্যবস্থা নেয় পুলিশ। অন্য দিকে, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ করে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়া অনিল।

    গত সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরের খরিদা এলাকায় বাম নেতা অনিলকে রাস্তায় ফেলে মারধরের অভিযোগ ওঠে ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলনেত্রী বেবির বিরুদ্ধে। নিজেকে বাঁচাতে একটি রঙের দোকানে ঢুকে গিয়েছিলেন ওই প্রবীণ ব্যক্তি। সেখান থেকে তাঁকে টেনে বার করে এনে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়। একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন), বৃদ্ধের গায়ে রং ঢেলে তাঁকে জুতোপেটা করছেন এক মহিলা। অনিল কোনও রকম উঠে সেখান থেকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁকে আবার রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়। পরে স্থানীয়দের সাহায্য নিয়ে খড়্গপুর টাউন থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন অনিল। তৃণমূলনেত্রীর কাণ্ড দেখে তাঁকে শো কজ় করেছে তাঁর দল। সেই সঙ্গে তৃণমূলের তরফে নেত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। পরের দিন বেবিকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তবে থানায় গিয়ে পাল্টা অনিলের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই তৃণমূলনেত্রী।

    ওই ঘটনার পরে বিচার চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে খোলাচিঠি লিখলেন খড়্গপুর শহরের প্রবীণ নেতার স্ত্রী। তিনি জানান, গত ৩০ জুন সকালে শহরের খরিদা এলাকায় স্থানীয় তৃণমূলনেত্রী বেবি কোলের হাতে প্রহৃত এবং নিগৃহীত হয়েছেন তাঁর ৬৬ বছর বয়সি স্বামী। অনিল ‘আমরা বামপন্থী, খড়্গপুর’ সংগঠনের সম্পাদক। খড়্গপুর শহরবাসীর কাছে তিনি ‘ভীমদা’ নামে পরিচিত। স্ত্রীর দাবি, প্রতিবাদী এবং পরোপকারী মানুষটিকে রাস্তায় ফেলে নিগ্রহ করা হয়েছে। ওই ঘটনার পরে চার দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও তাঁর বিরুদ্ধে ‘ব্যবস্থা’ নেয়নি পুলিশ।

    অনিলের অভিযোগ, বেবি ‘অত্যন্ত প্রভাবশালী।’ তিনি বলেন, ‘‘উনি পুলিশ-প্রশাসনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই ওঁকে গ্রেফতার করা হয়নি। তাই আমি কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছি।’’ অনিলের স্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে সমাজমাধ্যমে যে খোলাচিঠিতে লিখেছেন তার প্রতিলিপি পাঠিয়েছেন মমতাকে। সুস্মিতা বলেন, ‘‘গোটা ঘটনায় আমি আতঙ্কিত। তাই মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি। সঠিক বিচার চেয়েছি।’’ যদিও এ নিয়ে বেবির কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি।

    অন্য দিকে, শো কজ়ের চিঠিতে এফআইআরের কথার উল্লেখ থাকলেও শুক্রবার তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা জানান, দলের তরফে এফআইআর দায়ের হয়নি। তাঁরা অনিলদের দায়ের করা এফআইআরের কথা বলতে চেয়েছেন। যদিও বেবিকে দেওয়া শো কজ়ের চিঠিতে লেখা হয়েছিল, ‘‘আপনার বিরুদ্ধে খড়্গপুর টাউন থানায় দলীয় ভাবে এফআইআর রুজু হয়েছে।’’ শুক্রবার সুজয় বলেন, ‘‘এখনও শো কজ়ের জবাব পায়নি দল। আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)