তেলঙ্গানার রাসয়নিক কারখানায় বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের দুই শ্রমিক। ঘটনার পর থেকেই তাঁদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তাঁদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরেই দু’জনের দেহ দাসপুরের গ্রামের বাড়িতে ফিরছে। শুক্রবার রাতেই দেহ ফেরার কথা রয়েছে।
গত সোমবার তেলঙ্গানার সঙ্গারেড্ডি জেলায় পাশামাইলরম শিল্পতালুকের ওই রাসায়নিক কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের অভিঘাত এতটাই ছিল যে তিনতলার কারখানা ধূলিসাৎ হয়ে যায়। শ্রমিকদের দেহ ছিটকে পড়ে আশপাশে। বিস্ফোরণের খবর শোনার পর থেকেই চিন্তায় পড়ে দাসপুরের হরিরাজপুরের টুডু পরিবার। ওই পরিবারের চার জন কাজ করতেন ওই কারখানায়। ঘটনার পরই পরিবারের লোকেরা যোগাযোগ শুরু করেন চার জনের সঙ্গে। তাঁদের মধ্যে রাজীব টুডুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারলেও বাকি তিন জন অসীম টুডু, শ্যামসুন্দর টুডু এবং তারাপদ টুডুর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।
রাজীব পরিবারকে ফোনে জানান, তিনি ছুটিতে ছিলেন। কাজে যাননি। তবে বিস্ফোরণের খবর শুনেছেন। যাচ্ছেন ঘটনাস্থলে। পরে আবার জানান, বিস্ফোরণে তারাপদ গুরুতর আহত হয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কিন্তু অসীম এবং শ্যামসুন্দরের কোনও খোঁজ নেই। আদৌ বেঁচে আছেন কি না, জানা যাচ্ছে না। শোনামাত্রই দাসপুরের গ্রাম থেক পরিবারের লোকেরা পরিচয়পত্র নিয়ে চলে যান হায়দরাবাদে। খোঁজাখুঁজি শুরু হয় লাশের ভিড়ে। তবে বিস্ফোরণে দেহগুলি অবস্থা এমন হয়ে গিয়েছিল যে শনাক্ত করাই কঠিন হয়ে পড়ে।
শেষপর্যন্ত ডিএনএ ও রক্তপরীক্ষার মাধ্যমে অসীম এবং শ্যামসুন্দরকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়। তার পরে ময়নাতদন্তের পর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। সোমবার রাতে দু’জনের দেহ ফিরবে দাসপুরে।
সোমবারের বিস্ফোরণে ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে এখনও অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। কী ভাবে ওই কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। প্রাথমিক ভাবে খতিয়ে দেখে আধিকারিকদের অনুমান, কারখানার ‘স্প্রে ড্রায়ার’ (কোনও রাসয়নিক পদার্থ শুকানোর যন্ত্র)-এ তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণেই বিস্ফোরণ ঘটেছে।