• ভোররাতে ‘এম’কে নিয়ে পুলিশ কসবার কলেজে! রক্ষী-সহ বাকি অভিযুক্তেরাও ছিলেন, টানা পাঁচ ঘণ্টা ধরে হল ঘটনার পুনর্নির্মাণ
    আনন্দবাজার | ০৫ জুলাই ২০২৫
  • কসবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে শুক্রবার ভোররাত থেকে হল ঘটনার পুনর্নির্মাণ। মূল অভিযুক্ত ‘এম’কে নিয়ে কলেজে গিয়েছিল পুলিশ। ছিলেন ‘পি’, ‘জে’ এবং ধৃত নিরাপত্তারক্ষীও। চার জনকে নিয়েই সে দিনের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। লেগেছে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা। পুনর্নির্মাণ থেকে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তা নির্যাতিতার বয়ানের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে। তদন্তে তা কাজে লাগতে পারে।

    সূত্রের খবর, শুক্রবার ভোররাতে ৩টে নাগাদ অভিযুক্তদের নিয়ে কসবায় পৌঁছে গিয়েছিল পুলিশ। কলেজের সামনে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। তাঁদের সামনেই ঘটনার পুনর্নির্মাণ হয়। তা চলে সকাল ৮টা পর্যন্ত। তার পর অভিযুক্তদের নিয়ে আবার কলেজ থেকে বেরিয়ে যায় পুলিশ। কসবার গণধর্ষণের ঘটনার তদন্তে প্রথমে ৯ সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হয়েছিল। পরে তদন্তভার দেওয়া হয় কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের হাতে। আপাতত তারাই তদন্ত করছে।

    এর আগে নির্যাতিতাকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করিয়েছিল পুলিশ। নির্যাতিতার অভিযোগ অনুযায়ী, ২৫ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত ১০টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত তাঁর উপর নির্যাতন চলে। কলেজের ইউনিয়ন রুমে প্রথমে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। তার পর রক্ষীর ঘরে নিয়ে গিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। ওই সময়ে রক্ষীর কাছে সাহায্য চেয়েও পাননি নির্যাতিতা। তাঁকে ঘরের সামনেই বসিয়ে রাখা হয়েছিল। ধর্ষণ করেছেন ‘এম’। তাঁকে এই কাজে সহায়তা করেছেন ‘পি’ এবং ‘জে’। অভিযোগ, বাধা দিতে গেলে নির্যাতিতাকে হকি স্টিক দিয়ে মারধরের চেষ্টাও করা হয়।

    শুক্রবার ঘটনার পুনর্নির্মাণের ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ঘটনাস্থলের থ্রিডি স্ক্যানিংও করেছেন তদন্তকারীরা। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ঘটনার পুনর্নির্মাণ তদন্তের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। আমরা আজ সেই কাজ সম্পূর্ণ করেছি। চার অভিযুক্তকে সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ভোরে। পুনর্নির্মাণ থেকে আমরা যা পেয়েছি, সেগুলি এ বার নির্যাতিতার অভিযোগের সঙ্গে এবং অন্যান্য তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে।’’

    কলেজ ক্যাম্পাস থেকে ঘটনার দিনের সাত ঘণ্টার সিসিটিভি ফুটেজ আগেই সংগ্রহ করেছে পুলিশ। কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল নয়না চট্টোপাধ্যায়-সহ ১৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অভিযুক্তদের ফোনকলের নথি খতিয়ে দেখা হয়েছে। অভিযোগ, ঘটনার পরে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন মূল অভিযুক্ত। তিনি ওই কলেজেরই প্রাক্তনী এবং অস্থায়ী কর্মী। তাঁর দুই সহযোগী কলেজের বর্তমান ছাত্র। প্রত্যেকেই যুক্ত তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) সঙ্গে।

    মূল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এর আগে পুলিশের খাতায় ১১টি মামলা ছিল। অভিযোগ, আগেও মহিলাদের হেনস্থা করেছেন তিনি। পেশায় আইনজীবী ওই যুবক আলিপুর আদালতে প্র্যাকটিস করতেন। সম্প্রতি তাঁকে রাজ্য বার কাউন্সিল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)