• জোর করে সিটি স্ক্যান করানোর অভিযোগ! ৪ বছরের শিশুর মৃত্যুতে উত্তাল কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতাল
    আনন্দবাজার | ০৫ জুলাই ২০২৫
  • চিকিৎসায় গাফিলতিতে শিশুমৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে উত্তেজনা নদিয়ার কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে। বিক্ষুব্ধ জনতাকে সামাল দিতে বেগ পেতে হয়েছে পুলিশকে। মৃত শিশুর পরিবারের তরফে চিকিৎসক এবং নার্সদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

    হাসপাতালের একটি সূত্রে খবর, মঙ্গলবার মাথা যন্ত্রণা ও বমির উপসর্গ নিয়ে এক শিশুকে ভর্তি করানো হয় জেএনএম হাসপাতালে। শিশুর বাড়ি হরিণঘাটায়। বয়স চার বছর তিন মাস। পরিবারের দাবি, কর্তব্যরত চিকিৎসক পরিদর্শনে গিয়ে শিশুটির মস্তিষ্কের সিটি স্ক্যানের পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেই মতো বুধবার সিটি স্ক্যান করানো হয়। পরিবারের এক সদস্যের কথায়, ‘‘রেডিয়োলজিস্টের রিপোর্ট অনুযায়ী চিকিৎসক বলেন, ‘শিশুর মাথায় জল জমেছে। এমআরআই করতে হবে।’ ওই চিকিৎসক এ-ও জানান, শিশুটির অবস্থা আগের থেকে ভাল। তবে আরও একটু সুস্থ হোক। তার পরে আবার এমআরআই স্ক্যান করানো হবে।’’ তিনি জানান, সেই মতো পরিবারের সদস্যেরা রেডিওলজি বিভাগে কথা বলতে যান। রিপোর্ট দেখে তাঁরাও একই কথা বলেন। কিন্তু, এ-ও জানান, শিশুর যা শারীরিক অবস্থা, তাতে এমআরআই স্ক্যান করানো যাবে না। অভিযোগ, তার পরেও শুক্রবার রাতে জুনিয়র চিকিৎসক এবং নার্সেরা সিটি স্ক্যানের জন্য পরিবারের সদস্যদের উপর চাপ সৃষ্টি করেন। এমনকি, রোগী পরিবারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়। বলা হয়, পুনরায় সিটি স্ক্যান না-করলে হাসপাতাল থেকে রোগী বার করে দেওয়া হবে।

    মাঝরাতে চাপের মুখে পড়ে নতিস্বীকার করেন শিশুর পরিবারের সদস্যেরা। অভিযোগ, তাঁদের দিয়ে জোর করে লিখিয়ে নেওয়া হয় যে সিটি স্ক্যানের জন্য তাঁরা অনুমতি দিচ্ছেন। ঘটনাক্রমে সিটি স্ক্যানের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় শিশুটির। তার আগে তাঁকে সংজ্ঞাহীন করা হয়। কিন্তু তার পর থেকে আর তার জ্ঞান ফেরেনি বলে দাবি।

    সিটি স্ক্যান শেষে রোগীকে শিশু বিভাগের বেডে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে ছিল শিশুটি। দেওয়া হয়, অক্সিজেন ও স্যালাইন। পরিবারের দাবি, তার পরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যায়। শিশুর আর জ্ঞান ফেরেনি। শনিবার সকালে চিকিৎসকেরা পরিবারকে জানায় তার মৃত্যু হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় বিক্ষোভ। হাসপাতাল চত্বরে চিৎকার-চেঁচামেচি চলে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। আপাতত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, পরিবারের তরফে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে এ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)