• জলপাইগুড়ি শহরে নামী বেসরকারি স্কুলে ক্লাসেই নাবালিকার শ্লীলতাহানি! পুলিসের দ্বারস্থ ছাত্রীর পরিবার
    বর্তমান | ০৬ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: ক্লাসেই শ্লীলতাহানির শিকার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। অভিযুক্ত সহপাঠী এক ছাত্র! জলপাইগুড়ি শহরের নামী বেসরকারি স্কুলের এ ঘটনায় ব্যাপক আলোড়ন ছড়িয়েছে। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্কুলের তরফে উল্টে ছাত্রীর পরিবারকেই হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এনিয়ে  পুলিস-প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছে ওই ছাত্রীর পরিবার।বিষয়টি চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির পাশাপাশি জলপাইগুড়ি মহিলা থানা এবং জেলা পুলিস সুপারকে লিখিতভাবে জানিয়েছে নাবালিকার পরিবার। এই নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ মুখে কুলুপ আঁটলেও শনিবার জেলা পুলিস সুপার খণ্ডবাহালে উমেশ গণপত বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ জেলাশাসক শমা পারভীন জানিয়েছেন, ‘অভিযোগ জমা পড়েছে। প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।’ছাত্রীর মায়ের দাবি, ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৩ জুন। ক্লাসে পিছনের বেঞ্চে বসা এক ছাত্র তাঁর মেয়েকে শ্লীলতাহানি করে। প্রতিবাদ করায় ছেলেটি মেয়ের হাত মচকে দেয়। এনিয়ে যদি মেয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে নালিশ করে, তাহলে সে আরও ‘খারাপ’ কিছু করবে বলে শাসায়। বিষয়টি প্রথমে মেয়ে ক্লাস টিচারকে জানায়। কিন্তু তিনি প্রথমে মেয়ের কথায় আমল দেননি। পরে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। বাধ্য হয়ে মেয়ে বিষয়টি স্কুলের প্রিন্সিপালকে জানায়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত স্কুলের তরফে অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। উল্টে তাঁদেরই ধমক দেওয়া হচ্ছে। মেয়েকে স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।যদিও ছাত্রীর ক্লাস টিচার শনিবার ফোনে বলেন, ‘আমি মোটেই কোনও কিছু ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করিনি। বিষয়টি প্রিন্সিপাল দেখছেন।’ স্কুলের বক্তব্য জানতে প্রিন্সিপালকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। মেসেজেরও জবাব মেলেনি।    ছাত্রীর মায়ের অভিযোগ, ক্লাসের ভিতর এতবড় ঘটনা ঘটে গেলেও স্কুলের তরফে তাঁদের কিছু জানানো হয়নি। মেয়ে বাড়ি এসে তাঁকে সবটা বলে। এরপরই তিনি ক্লাস টিচারকে ফোন করে বিষয়টি জানতে চান। প্রথমে কথা বলতে পারবেন না বলে জানান ক্লাস টিচার। পরে নিজে ফোন করে জানান, যে ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, সে মানসিকভাবে অসুস্থ। আগেও এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে ওই ছাত্র।ছাত্রীর মায়ের কথায়, ‘ক্লাসের মধ্যে আমার মেয়ে শ্লীলতাহানির শিকার হবে, এটা ভাবতেও পারিনি। মেয়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা ভেবে আমরা স্তম্ভিত হয়ে পড়ি। ওইদিন রাতেই ই-মেল করে স্কুলের কাছে বিষয়টি জানতে চাই। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্কুল কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, সেটাও জানতে চাওয়া হয়।’ তাঁর দাবি, পরদিন লিখিত অভিযোগপত্র নিয়ে স্কুলে যাই। কিন্তু প্রিন্সিপাল খারাপ ব্যবহার করেন। এমনকী আমার অভিযোগপত্র স্কুলের তরফে রিসিভ করে দিতেও অস্বীকার করা হয়। এরপরই ২৬ জুন বিষয়টি জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটিকে জানাই। প্রথমে মেল করে, পরে সরাসরি অফিসে গিয়ে অভিযোগপত্র জমা দিয়ে আসা হয়। শনিবার জেলা পুলিস সুপারের অফিসে লিখিত অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)