জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: সোশাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করে চলছে প্রচার! স্বপ্নে পাওয়া গাছের শিকড় থেকে সারছে ৬৪টি রোগ? আর সেই কথা জানতে পেরেই বিভিন্ন এলাকা থেকে সেখানে জড়ো হচ্ছেন বহু মানুষ। বাতের ব্যথা, হাঁটুর ব্যথার উপশমের জন্য বহু মানুষ সেখানে ভিড় করেছেন। এসব আসলে বুজরুকি ছাড়া আর কিছুই নয়, এমনই দাবি যুক্তিবাদী মঞ্চ ও বিজ্ঞানমঞ্চের সদস্যদের। এই বিষয়ে পুলিশে অভিযোগও জানানো হয়েছে বলে খবর।
জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার ময়নাগ্রাম। সেখানেই পেশায় রাজমিস্ত্রী এক যুবকের বাস। জনৈক ওই যুবক সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার করেছেন, তিনি স্বপ্নে একটি গাছের শিকড় পেয়েছেন। সেই শিকড় ধারণে ৬৪টি রোগ নিরাময় হচ্ছে। সেই বার্তা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে যায় বলে খবর। সোম, মঙ্গল ও শুক্রবার এই শিকড় দেওয়া হবে বলে জানা যায়। চলতি সপ্তাহে ময়না গ্রামের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জলেশ্বরের একটি সমবায় ব্যাঙ্কের সামনে ওই শিকড় নিয়ে ওই যুবক বসেছিলেন বলে খবর। ওই শিকড়ের জন্য বহু মানুষ সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন বলে খবর।
ওই শিকড়ের জন্য নির্দিষ্ট অর্থ দাবি করা হয়নি বলে খবর। যার যেমন ইচ্ছে, তেমন মূল্য নেওয়া হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। গাইঘাটার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষজন সেখানে ভিড় করেছেন বলে খবর। এই ঘটনাকে বুজরুকি বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানমঞ্চের সদস্যরা। ঘটনার প্রতিবাদে পথে নামে যুক্তিবাদী মঞ্চ ও একাধিক বিজ্ঞান সংগঠন। যুক্তিবাদী কর্মীদের প্রশ্ন, কীভাবে এইসময়ে দাঁড়িয়ে মানুষ স্বপ্নে রোগ সরানোর ওষুধ দেখতে পায়? যদি গাছের শিকড় মানুষের রোগ সারিয়ে দিতে পারে, তাহলে বিজ্ঞান ও চিকিৎসা ব্যবস্থা কী করছে? তাদের অভিযোগ, কিছু মানুষ এখনও কুসংস্কারে ডুবে আছে। সেই সুযোগ নিয়ে ব্যবসা করছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। দোষীকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। যুক্তিবাদী মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক প্রদীপ সরকার বলেন, “এত বড় বুজরুকি মেনে নেওয়া যায় না। তাই আমরা থানার দ্বারস্থ হয়েছি। সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করে এই প্রচার চালিয়েছিল বলে জানতে পেরেছি।” যদিও ওই ব্যক্তির কোনও বক্তব্য এই বিষয়ে পাওয়া যায়নি। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বলে খবর।