• উল্টোরথেও জনজোয়ারে ভাসল দীঘা
    বর্তমান | ০৬ জুলাই ২০২৫
  • শ্রীকান্ত পড়্যা , দীঘা:

    উল্টোরথেও ভক্তদের জনজোয়ারে ভাসল দীঘা। শনিবার সকাল থে঩কেই রেল ও সড়কপথে হাজার হাজার ভক্তের স্রোত নামে। প্রত্যেকেরই গন্তব্যস্থল ছিল দীঘার জগন্নাথ মন্দির ও মাসির বাড়ি। টোটো, অটো পরিষেবা বন্ধ থাকলেও কোনও সমস্যা হয়নি। ভগবান দর্শনে প্রবীণরাও ভক্তি আর আবেগে হেঁটে জগন্নাথ মন্দির থেকে মাসির বাড়ি পৌঁছে গিয়েছেন। সাড়ে ১২টা নাগাদ মাসির বাড়িতে ৫৬ভোগ আহারের পর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা। আরতির পর বেলা ২টো ১৫মিনিট নাগাদ প্রথমে মাসির বাড়ি থেকে সুদর্শন চক্র রথে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর সেবাইতদের হাতে দোল খেতে খেতে তিনজনের বিগ্রহ নিয়ে যাওয়া হয় ১১৬বি জাতীয় সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা রথে। সমুদ্রের ধারে মাসির বাড়ির সামনে তখন শুধুই ‘জয় জগন্নাথ’ ধ্বনি।

    রথে বিগ্রহ স্থাপন করার পর রীতি অনুযায়ী পুজো ও আরতি হয়। মাসির বাড়িতে ভক্তদের জন্য অন্ন প্রসাদের ব্যবস্থা ছিল। উল্টোরথে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। রাজ্যের পাঁচ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, পুলক রায়, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, ইন্দ্রনীল সেন ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ছাড়াও মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, রাজ্য পুলিসের প্রধান রাজীব কুমার উপস্থিত ছিলেন। রথে তিনজনের বিগ্রহ স্থাপনের পর রাজপথ কালো মাথায় ঢেকে যায়। জগন্নাথ মন্দির পর্যন্ত জাতীয় সড়কের দু’ধারে ব্যারিকেডের বাইরেও সারি সারি ভক্তদের লাইন ছিল। প্রত্যেকের চোখ রথের দিকে। কখন গড়াবে রথের চাকা। বিকেল ৪টে নাগাদ সোনার ঝাড়ু দিয়ে উল্টোরথ যাত্রার পথ পরিষ্কার করেন মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ডের অন্যতম সদস্য রাধারমণ দাস। তারপরই মাসির বাড়ি থেকে মন্দিরের উদ্দেশে রথের চাকা গড়াতে শুরু করে।

    রথের রশিতে টান দিতে ব্যারিকেডের বাইরে হাজার হাজার ভক্ত অপেক্ষায় ছিলেন। রথযাত্রা শুরু হওয়ার পর সেই রশি ছোঁয়ার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। ধীরে ধীরে রথ এগিয়ে চলে মন্দিরের দিকে। সন্ধ্যা ৬টায় জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে নিয়ে রথ মন্দিরের মূল গেটে পৌঁছয়। সেখানে তিনজনের বিগ্রহ রথ থেকে নামিয়ে মন্দির চত্বরে চালাঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই বেদিতে স্থাপন করা হয় তাঁদের। আপাতত তিনদিন এখানেই থাকতে হবে জগন্নাথ বলরাম ও সুভদ্রাকে। কথিত আছে, মাসির বাড়ি থেকে ফেরার পর মূল মন্দিরে ঢোকার অনুমতি পান না তিন ভাইবোন। কারণ, লক্ষ্মী পথ আটকে দাঁড়িয়ে থাকেন। তাঁকে শ্রীমন্দিরে একা রেখে মাসির বাড়িতে আনন্দ করার খেসারত হিসেবে বাইরে কাটাতে হয়। একাদশী তিথিতে পালিত হবে সুনাবেশ। জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলরাম সোনার গয়নায় সেজে উঠবেন। দ্বাদশীর সন্ধ্যায় পালিত হবে অধরপনা। রীতি মেনে, জগন্নাথদেবকে শরবত খাওয়ানো হবে। সবশেষে হবে নিলাদ্রিবিজয় উৎসব। ওই উৎসবের মধ্য দিয়ে তিনজনের বিগ্রহকে গর্ভগৃহে নিয়ে যাওয়া হবে।

    ভক্তদের ভিড়ে হোটেল মালিক থেকে সাধারণ দোকানদাররা খুশি। দীঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, উল্টো রথে স্থানীয়দের পাশাপাশি বাই঩রে থেকেও অনেকে এসেছেন। তাঁরা হোটেলে উঠেছেন।
  • Link to this news (বর্তমান)