• ইনস্টাগ্রামে পরিচয়, ফুঁসলিয়ে সোজা দিল্লি! যৌনপল্লি থেকে উদ্ধার রাজ্যের দুই কিশোরী, কী ভাবে অভিযান চালাল পুলিশ?
    আনন্দবাজার | ০৫ জুলাই ২০২৫
  • দশম শ্রেণির দুই ছাত্রীকে দিল্লির একটি যৌনপল্লি থেকে উদ্ধার করল মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ। অভিযান চালিয়ে দুই নাবালিকাকে বিক্রির চেষ্টা বানচাল করলেন তদন্তকারীরা। জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, দিল্লি পুলিশ এবং সেখানকার একটি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহযোগিতায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে দুই নাবালিকাকে। অপহরণ ও বিক্রির চেষ্টার অভিযোগের উত্তর ২৪ পরগনার এক যুবকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। রবিবারের মধ্যেই তাঁদের মুর্শিদাবাদ জেলায় ফিরিয়ে আনা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

    পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৩০ জুন জিয়াগঞ্জ শহরের একটি নামী স্কুলের দশম শ্রেণির বছর ষোলোর দুই পড়ুয়া একসঙ্গে নিখোঁজ হয়ে যায়। দুই ছাত্রীর বাড়ির লোক সারা দিন খোঁজাখুঁজি করে কোথাও সন্ধান না পাওয়া পেয়ে সন্ধ্যায় জিয়াগঞ্জ থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করে। এর পর পুলিশ একটি অপহরণের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে। শহরের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে জানা যায় ঘটনার দিন দুই ছাত্রী স্কুলে না গিয়ে জামাকাপড় বদলে আজিমগঞ্জ জংশন থেকে কাটোয়াগামী একটি ট্রেনে চেপে হাওড়া চলে যায়।

    দুই ছাত্রীর হাওড়া চলে যাওয়া সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পরেই জেলা পুলিশের ‘স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপ’ এবং ‘সাইবার ক্রাইম’ থানার আধিকারিকেরা জিয়াগঞ্জ থানার আধিকারিকদের তদন্তে সহযোগিতা করতে শুরু করেন। আধিকারিকেরা নিখোঁজ দুই ছাত্রীর ‘ইনস্টাগ্রাম চ্যাট’ খতিয়ে দেখে বুঝতে পারেন, উত্তর ২৪ পরগনার এক যুবক তাদের প্রলোভন দেখিয়ে দিল্লির একটি হোটেলে নিয়ে গিয়েছে।

    দিল্লির পাহাড়গঞ্জ থানা এলাকায় সেই হোটেলে মুর্শিদাবাদ পুলিশ অভিযান চালালেও নিখোঁজ দুই ছাত্রীর সন্ধান পাওয়া যায়নি। এর পর স্থানীয় কিছু তথ্যের ভিত্তিতে এবং দিল্লির একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যদের সহযোগিতায় মুর্শিদাবাদ পুলিশ জানতে পারে, পাহাড়গঞ্জ থানা এলাকার অন্য একটি হোটেলে দুই ছাত্রীকে রাখা হয়েছে। স্থানীয় পুলিশকে নিয়ে সেই হোটেলে অভিযান চালায় মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার দু’টি বিশেষ দল। হোটেলের নামে চলা যৌনপল্লী থেকে দুই ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। আসগর আলি নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে মুর্শিদাবাদ পুলিশ।

    পুলিশ সূত্রের খবর, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানতে পেরেছে, আসগরের সঙ্গে সমাজমাধ্যমে ওই দুই ছাত্রীর পরিচয়। দুই ছাত্রীকে বিভিন্ন রকম প্রলোভন দেখিয়ে তিনিই দিল্লি নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল দিল্লির ওই যৌনপল্লিতে তাদের বিক্রি করে দেওয়া।

    মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার অতিরিক্ত সুপার (লালবাগ) রাসপ্রীত সিংহ বলেন, ‘‘উদ্ধার হওয়া দুই ছাত্রীকে নিরাপদে জেলায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)