১৮টি খুনের মামলা, ডাকাতি, দু’বার জেলযাত্রাও! এ বার নাম জড়াল বিস্ফোরণে, পূর্ব বর্ধমানে কি ফিরল ‘জঙ্গল-রাজ’?
আনন্দবাজার | ০৫ জুলাই ২০২৫
পূর্ব বর্ধমানে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় তাঁর নাম জড়িয়েছে। তাঁর নাম নিয়েছেন কাটোয়ার তৃণমূল বিধায়ক, দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। দাবি করেছেন, শুক্রবার রাতে রাজুয়া গ্রামে বোমা বাঁধার কাজ করতে গিয়ে যে বিস্ফোরণ ঘটেছে, সেই বোমা আসলে তৃণমূলকর্মীদের উপর হামলার উদ্দেশ্যে বাঁধা বচ্ছিল। নিশানায় তিনি নিজেও ছিলেন বলে দাবি করেছেন বিধায়ক। এতেই জেলা জুড়ে আবার আশঙ্কা, ‘জঙ্গল-রাজ’ কি ফিরে আসছে পূর্ব বর্ধমানে?
রবীন্দ্রনাথ দাবি করেছেন, রাজুয়া গ্রামে যাঁরা বোমা বাঁধছিলেন, তাঁরা সকলেই জঙ্গল শেখের লোক। তৃণমূল সূত্রে খবর, বিধায়ক যে জঙ্গলের কথা বলেছেন, সেই জঙ্গল এককালে তৃণমূলেরই কর্মী ছিলেন। ২০১৫ সালে পুরভোটে জিতে উপপুরপ্রধানও হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার ছ’মাসের মধ্যে জঙ্গলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার পর দীর্ঘ কয়েক বছর জেলেও ছিলেন। পরে অবশ্য জামিনে মুক্তি পান। সম্প্রতি মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশও তাঁকে একটি ডাকাতির মামলায় গ্রেফতার করে। বর্তমানে জঙ্গল এলাকাছাড়া।
শুধু ডাকাতিই নয়, বহু ফৌজদারি অপরাধের মামলায় নাম রয়েছে জঙ্গলের। পুলিশ সূত্রে খবর, উপপুরপ্রধান নির্বাচিত হওয়ার পর একটি খুনের মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সব মিলিয়ে ১৮টি খুনের মামলা রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। মারামারি, তোলাবাজি, বেআইনি অস্ত্র রাখা-সহ মোট ৪২টি ফৌজদারি মামলায় জঙ্গলের নাম রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের একটি সূত্র। এই মুহূর্তে তাঁর বিরুদ্ধে ১২টি মামলার বিচারপ্রক্রিয়া চলছে। অধিকাংশ মামলাতেই তিনি জামিনে মুক্ত।
জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, ‘‘কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি প্রমাণ করে দিয়েছে, তৃণমূলের রাজত্বে তৃণমূলের নেতারাও নিজেদের নিরাপদ ভাবেন না। বোমা বারুদের ভয়ে এখন শাসক দলের নেতারাও কাঁপছেন। এতেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে, বাংলা এখন বোমা-বারুদের আঁতুড়ঘর হয়ে গিয়েছে। যার বিনাশ ঘটাতে পুলিশও ব্যর্থ।’’
কাটোয়ার এসডিপিও কাশীনাথ মিস্ত্রি অবশ্য বলেন, ‘‘কী উদ্দেশ্যে বোমা বাঁধা হচ্ছিল, তা এখনও নিশ্চিত ভাবে জানা যায়নি। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চলছে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, আরও এক জন আহত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গিয়েছেন। তাঁর সন্ধান চলছে।’’