• ভিনরাজ্যে বাঙালি শ্রমিক নির্যাতনে ক্ষুব্ধ মহুয়া
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৬ জুলাই ২০২৫
  • বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য ওড়িশা-সহ বিজেপি শাসিত বিভিন্ন রাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচারের অভিযোগে সম্প্রতি সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বর্বর অত্যাচারের প্রতিবাদে আদালতের দ্বারস্থও হয়েছে বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। শুক্রবার এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে তৃণমূল সাংসদ সামিরুল ইসলাম হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ভিন রাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর ঘটে চলা এই অত্যাচারের মোকাবিলা করা হবে কেবল আইনি পথেই। এরই মাঝে এবার বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানালেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তাঁর ডাক, নিজ অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য ‘বিজেপি হঠাও’ আন্দোলনে নামতে হবে বাংলার মানুষকে।

    শনিবার এক ভিডিও-বার্তায় মহুয়া বলেন, ‘রাজস্থান, মহারাষ্ট্রের পর এবার উড়িষ্যা! কেবল বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য কখনও বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে, আবার কখনও শ্রমিকদের এক ঘরে করে রাখা হচ্ছে। বাংলা ভাষায় কথা বলা অপরাধ? ভারতের অন্যান্য রাজ্যের বহু মানুষ বাংলায় থেকে কাজ করেন। তাঁদের কখনও অসম্মান করা হয়নি।’ এরপরই ক্ষুব্ধ কণ্ঠে তাঁর সংযোজন, ‘বিজেপি শাসিত রাজ্যে কেন বারংবার বাঙালি খেটে খাওয়া মানুষদের অবহেলিত এবং অত্যাচারিত হতে হবে? কেন বাঙালি হঠাও রব তুলবে বিজেপি? তাঁদের হিংস্রতার আঁচ পাওয়া যাচ্ছে এখন থেকেই! যাঁরা বাংলা ভাষা এবং বাঙালিকে ঘৃণা করে তাঁদের বিষয়ে বাংলার মানুষকে সচেতন হয়ে বিজেপিকেই দূরে হঠাতে হবে।’

    প্রসঙ্গত, ওড়িশার একাধিক জেলায় কাজ করতে যাওয়া পশ্চিমবঙ্গের শ্রমিকদের উপর সম্প্রতি বেশ কিছু হেনস্থার অভিযোগ সামনে এসেছে। কখনও খোলাখুলি বেতন না দেওয়া, তো কখনও ‘বাঙালি’ পরিচয় জানার পর দুর্ব্যবহার। এই নিয়েই ক্রমে ক্ষোভ জমছে রাজনৈতিক মহলে। এই প্রেক্ষিতেই তৃণমূলের এই প্রতিবাদ নতুন মাত্রা যোগ করল। সামিরুল জানিয়েছেন, ‘বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর যে বর্বর নিপীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘন চলছে, তার বিরুদ্ধে আমরা ইতিমধ্যেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। তবে এটুকু বলি, আমরা একবার নয়, বারবার বিচারব্যবস্থার শরণাপন্ন হব।’

    প্রথমে সামিরুল এবং পরে মহুয়ার মন্তব্য স্পষ্ট করে দিল, এই ইস্যুতে তৃণমূল রাজনীতিক ও সাংবিধানিক— দুই লড়াই-ই চালাতে চায়। এর আগে রাজস্থানে বাঙালি শ্রমিক নিপীড়নের ঘটনায় সরাসরি পদক্ষেপ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর ভাষায়, ‘বাংলা রবীন্দ্র-নজরুল-নেতাজির রাজ্য। তাহলে কেন এত দ্বিচারিতা?’ এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার দাবিও জানিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)