হাইকোর্টের নির্দেশে তিন বিজেপি কর্মীর খুনের তদন্তভার নিল সিবিআই
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৬ জুলাই ২০২৫
২০১৯ সালে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে তিন বিজেপি কর্মীকে খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। এই হত্যাকাণ্ডে নাম জড়ায় তৎকালীন তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের। সেই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশ মেনে ওই মামলার তদন্তভার হাতে নিল সিবিআই। সিবিআই সূত্রে খবর, ঘটনায় মূল অভিযুক্ত শাহজাহান শেখের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে তারা। প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে তৃণমূল থেকে ৬ বছরের জন্য শাহজাহানকে সাসপেন্ড করা হয়। দলের সমস্ত পদ থেকেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
২০১৯ সালের ৮ জুন সন্দেশখালির বাসিন্দা প্রদীপ মণ্ডল, দেবদাস মণ্ডল এবং সুকান্ত মণ্ডলকে খুনের অভিযোগ ওঠে। তাঁরা সকলেই বিজেপি করতেন। মৃতদের পরিবারের দাবি, ওই খুনের মামলার প্রাথমিক চার্জশিটে নাম ছিল শাহজাহানের। কিন্তু পরে সিআইডির হাতে তদন্তভার গেলে চার্জশিট থেকে তাঁর নাম বাদ যায়। ২০২২ সালে অপর একটি খুনের মামলাতেও শাহজাহান জামিন পেয়ে যান।
২০১৯ সালের জুনে সন্দেশখালির ভাঙ্গিপাড়া এলাকার বাসিন্দা প্রদীপ মণ্ডলের বাড়িতে একদল সশস্ত্র দুষ্কৃতী হামলা চালিয়েছিল বলে অভিযোগ। তাঁকে তাড়া করে নিয়ে গিয়ে গুলি করে খুন করা হয় বলে দাবি পরিবারের। প্রদীপের তুতো ভাই সুকান্তের বাড়িতেও দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছিল। একই কায়দায় তাঁকেও গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। সন্দেশখালিরই অপর এক বাসিন্দা দেবদাস মণ্ডলকেও ওই সময় খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ।
এই ঘটনায় শেখ শাহজাহান এবং তাঁর বাহিনীর বিরুদ্ধে দু’টি অভিযোগ দায়ের করা হয়। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ঘটনাটির তদন্তভার যায় সিআইডি-র হাতে। সেই সময়ে সাক্ষীদের গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সিআইডি মামলার চূড়ান্ত চার্জশিট থেকে বাদ যায় শেখ শাহজাহানের নাম। এর পরেই কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করা হয় মৃতদের পরিবারের পক্ষ থেকে। সিবিআই তদন্ত চেয়ে করা হয় আবেদনও।
প্রসঙ্গত, রেশন দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেপ্তার হয়ে জেলবন্দি রয়েছেন শেখ শাহজাহান। এলাকার অনেকের কৃষিজমি জবরদখল, সেই অধিকৃত জমিতে মাছের ভেড়ি বানানো, ভেড়ির লিজের টাকা না দেওয়ার মতো নানা অভিযোগ উঠেছিল শাহজাহান ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। তাঁর জামিনের শুনানি চলছে কলকাতা হাইকোর্টে। এবার বিজেপি কর্মীদের খুনের মামলায় শাহজাহানের বিরুদ্ধে নতুন করে তদন্ত শুরুর নির্দেশ গেল সিবিআইয়ের কাছে। এর ফলে বিপাকে পড়লেন সন্দেশখালির এই দাপুটে নেতা।