জেলায় জেলায় চলছে মনোজিৎ মডেল। শাসকদলের সঙ্গে নিযুক্ত থাকলেই অস্থায়ী কর্মীর পদে নিয়োগ হতে পারবে। এই অভিযোগ উঠে আসছে রাজ্যের বিভিন্ন কলেজ থেকে। তবে এবার অবসান হতে চলেছে এই প্রক্রিয়া। বদল আসতে চলেছে শিক্ষাকর্মী নিয়োগের পদ্ধতিতে। রাজ্যের কলেজ গুলিতে নিয়োগ হওয়া অস্থায়ী কর্মীদের বাড়বাড়ন্ত বেড়েই চলছে। সম্প্রতি কসবার ল কলেজে ঘটে যাওয়া নিন্দনীয় ঘটনাটিতে অভিযুক্ত, কলেজের একজন অস্থায়ী কর্মী। এর অবসান করতে রাজ্য সরকারের অধীনে থাকা কলেজগুলিতে এবার থেকে শিক্ষাকর্মী নিয়োগ হবে কেন্দ্রীয় পদ্ধতিতে।
কলেজ সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষাকর্মী নিয়োগবিধির খসড়া প্রস্তুত করে ফেলেছে উচ্চশিক্ষা দপ্তর। এর মাধ্যমে আর আগের মতো কলেজগুলি নিজের মতো করে কোনো শিক্ষাকর্মী নিয়োগে ভূমিকা নিতে পারবে না। ইতিমধ্যে এই পদ্ধতি অনুমোদনের জন্য আইন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে নিয়োগবিধির খসড়া। অনুমোদন মিললে তারপর বেশ কিছু ধাপ অতিক্রমের পর তা ফের ফিরে আসবে উচ্চশিক্ষা দপ্তরে। তারপর সেখান থেকে কলেজ সার্ভিস কমিশনের কাছে পাঠানো হবে নিয়োগবিধি। এরপরই বিজ্ঞপ্তি জারি করে পদ্ধতিটি চালু করা হবে।
কলেজ সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষাকর্মী নিয়োগের জন্য একটি বিল পাশ হয় ২০২২ সালে। আইনেও পরিণত হয়। কিন্তু শেষপর্যন্ত তা কার্যকর করা হয়নি। এমনিতে কলেজগুলিই শিক্ষাকর্মী নিয়োগ করত। বর্তমানে প্রচলিত এই নিয়ম অনুসারে, কোন কলেজে কত জন শিক্ষাকর্মী নিয়োগ যাবে, তার একটি তালিকা তৈরি করত শিক্ষা দপ্তর। সরকারের অনুমোদিত ওই পদগুলির ভিত্তিতে প্রতিটি কলেজে আলাদা আলাদা ভাবে নির্দিষ্ট পরীক্ষা এবং প্রক্রিয়া মেনে শিক্ষাকর্মী নিয়োগ হত। বাম আমল থেকেই এই নিয়ম চলে আসছিল। এই নিয়ম বদল করার জন্য তিন বছর আগেই উদ্যোগী হয় রাজ্য সরকার। কেন্দ্রীয় ভাবে কলেজ সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষাকর্মী নিয়োগের জন্য বিল পাশ হয় বিধানসভায়। কিন্তু ওই নিয়োগবিধি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
নতুনভাবে আবার এই নিয়োগবিধি তৈরি নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়েছে। এই প্রসঙ্গে আশুতোষ কলেজের এক অধক্ষ্য মানস কবি বলেছেন, কলেজ সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষাকর্মী নিয়োগ হলে গোটা পদ্ধতিটা আরও স্বচ্ছ হবে বলে আশা করেন তিনি। কলেজ সার্ভিস কমিশনের এক কর্তা বলেন, ‘প্রক্রিয়া চলছে। উচ্চশিক্ষা দপ্তর থেকে আমাদের কাছে নিয়োগবিধি পাঠানো হবে। কোন কলেজে কত শূন্যপদ রয়েছে, নিয়োগবিধি আসার পরে সে বিষয়ে তথ্যসংগ্রহ করা হবে সংশ্লিষ্ট কলেজগুলি থেকে। এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে উচ্চশিক্ষা দপ্তর, আইন দপ্তর, অর্থ দপ্তর জড়িত। এই প্রক্রিয়াগুলি চলছে। এর পরে নিয়োগবিধি এলে, আমরা কমিশনের কাজের প্রক্রিয়া শুরু করব।’