উল্টোরথেই দুর্গাপ্রতিমার কাঠামোয় পড়ল গঙ্গামাটি, কান্দির জমিদারবাড়ি ও প্রাচীন পুজো ঢাকে পড়ল কাঠি
বর্তমান | ০৭ জুলাই ২০২৫
সংবাদদাতা, কান্দি: দেবীর কাঠামোতে গঙ্গামাটি পড়তেই দুর্গাপুজোর রীতি চালু হয়ে গেল কান্দির বনেদি বাড়িগুলিতে। কোথাও নিত্য সন্ধ্যা আরতির মাধ্যমে দেবীকে আহ্বান করা হচ্ছে। কোথাও পুরোহিত দিয়ে দেবীর নিত্যপুজো শুরু হয়েছে। কোথাও আবার দেবীকে নিত্য ভোগ নিবেদন করা হবে।
প্রসঙ্গত, কান্দি মহকুমা এলাকায় শতাধিক প্রাচীন জমিদার ও বনেদি বাড়ির পুজো রয়েছে। যেগুলিতে শনিবার উল্টো রথের দিনেই দেবীর কাঠামোতে গঙ্গামাটি পড়েছে। পুরোহিত দিয়ে পুরনো কাঠামোতেই এই গঙ্গামাটির প্রলেপ দেওয়া হয়। এরপর মৃৎশিল্পী কাঠামো ঠিকঠাক করে দেবীর রূপ দেবেন। কান্দির জেমো এলাকার পুরোহিত পীযুষ গোপাল গোস্বামী বলেন, রীতি অনুযায়ী কান্দির অনেকগুলি প্রাচীন পুজোয় উল্টোরথের দিন দেবীর কাঠামোতে গঙ্গামাটির প্রলেপ দেওয়া হয়েছে। এরপর রীতি অনুযায়ী নিত্যপুজো, সন্ধ্যা আরতির মাধ্যমে দেবীর আহ্বান করা হবে।
কান্দির ভাঙাবাড়ি পুজোর সদস্য সত্যব্রত সিংহ বলেন, রীতি অনুযায়ী উল্টোরথ থেকেই আমাদের পুজো শুরু হয়ে গিয়েছে। এরপর প্রতিদিন দেবীর পুজোর্চ্চনা চলবে। অর্থাৎ এদিন থেকেই পুজো শুরু হয়ে গেল বলা যায়। তাই এখন থেকেই আমরা ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। বড়ঞা ব্লকের পাঁচথুপি গ্রামে আটটি জমিদারি পুজো সহ প্রায় ১২টি প্রাচীন পুজো রয়েছে। যেগুলির সবগুলি উল্টোরথের দিন দেবীর কাঠামোতে গঙ্গামাটির প্রলেপ পড়েছে। পাঁচথুপি নাগরিক মঞ্চের সম্পাদক তথা স্থানীয় বাসিন্দা অজিত কুমার লাহা বলেন, গ্রামের প্রতিটি প্রাচীন জমিদারি ও বনেদি বাড়ির পুজোয় গঙ্গামাটি পড়ে গিয়েছে। অর্থাৎ পুজো শুরু হয়ে গেল বলা যায়। পাঁচথুপি গ্রামের এক জমিদার বাড়ির সদস্য সুদীপ মোহন ঘোষ মল্লিক জানান, প্রাচীন রীতি অনুযায়ী উল্টোরথের দিন থেকেই দেবীর বোধন শুরু হয়ে গিয়েছে। এখন রীতি অনুযায়ী দেবীর নিত্য সন্ধ্যা আরতী ছাড়াও অনেক ক্রিয়াকর্ম চলবে। অর্থাৎ আমাদের এখন আর দম ফেলার সময় থাকবে না। দেবীর পুজো নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম।
কান্দির বাসিন্দা তথা একটি পুরোহিত সম্প্রদায়ের প্রাক্তন জেলা সভাপতি নবকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, কান্দি মহকুমা এলাকায় শতাধিক প্রাচীন জমিদারি ও বনেদি বাড়ির পুজো রয়েছে। যেগুলিকে ঘিরে বাসিন্দাদের চরম উন্মাদনা থাকে। ওইসব পুজোগুলি কার্যত উল্টোরথের দিন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে। এড়োয়ালি, খড়গ্রাম, কান্দি, বড়ঞা এলাকায় ছড়িয়ে রয়েছে জমিদারি ও প্রাচীন পুজোগুলি। কোথাও দেবীকে নিত্য ভোগ নিবেদন করা হচ্ছে। আবার কোথাও দেবীর নিত্য পুজো চলছে। কোথাও শুধুমাত্র সন্ধ্যা আরতীর মাধ্যমেই দেবীকে আহ্বান করা হচ্ছে। অর্থাৎ পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে গেল। -নিজস্ব চিত্র