• গোঘাটে পুকুরপাড়ে ঝোপ থেকে পচাগলা দেহ উদ্ধার, নিখোঁজ যুবককে খুনের দাবি পরিবারের
    বর্তমান | ০৭ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: রবিবার সাত সকালে গোঘাটে পুকুর পাড়ের ঝোপ থেকে নিখোঁজ এক যুবকের পচাগলা দেহ উদ্ধার করে পুলিস। গোঘাটের রঘুবাটি পঞ্চায়েতের রাজগ্রামের ওই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুলিস জানিয়েছে, মৃতের নাম বরুণ দাস(৩৪)। গত বৃহস্পতিবার থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। দু’দিন আগে বাড়ি থেকে কিছু দূরে কামারে পুকুরের পাড় থেকে বরুণবাবু সাইকেলটি খুঁজে পান বাসিন্দারা। তারপর ওই পুকুরের পাড়ে বাসিন্দারা তল্লাশি চালান। কিন্তু, যুবকের খোঁজ পাননি। এদিন সকালে গ্রামেরই পৃথক বড় পুকুরের পাড়ে ঝোপ থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। পুলিস দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। যুবকের মৃত্যু নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। তাঁকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা সন্দেহ করছেন। হুগলি গ্রামীণের অতিরিক্ত পুলিস সুপার কৃশানু রায় বলেন, গোঘাটে এক যুবকের পচাগলা দেহ পাওয়া গিয়েছে। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে মৃতের স্ত্রীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। 

    স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বরুণবাবু রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। বাড়িতে তাঁর বাবা, মা, স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান। রাতে বাড়ি না ফেরায় খবর দেওয়া হয় থানায়। পুলিস ঘটনার তদন্তে নেমে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। পাশাপাশি পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারাও বিভিন্ন জায়গায় তাঁর খোঁজ করেন। কিন্তু, তাঁকে কোথাও পাওয়া যায়নি। এদিন সকালে গ্রামের এক যুবক বড় পুকুরের কাছে গেলে পচাগলা মৃতদেহটি দেখতে পান। তারপর স্থানীয় বাসিন্দারা পুকুরপাড়ে ভিড় জমান। থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিস ঘটনাস্থলে যায়। মৃতের বাঁ পায়ের একাংশ শিয়ালে খুবলে খেয়েছে বলে দাবি। পুলিস সেখান থেকে দেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। দেহ উদ্ধারের ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁকে খুন করে ওখানে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে বাসিন্দারা মনে করছেন। এমনকী, মৃতের কাছে থাকা মোবাইল ফোনটিও পাওয়া যাওয়া যায়নি। পুলিস অবশ্য জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। 

    মৃতের মা নমিতা দাস বলেন, অন্যান্য দিনের মতো ছেলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে রঘুবাটি মোড়ে যায়। ও রাতে বাড়ি ফিরত। ওইদিন রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ বউমাকে ফোন করেছিল। বউমা ছেলেকে বাড়ি ফিরে আসতে বলে। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই ছেলের ফোন বন্ধ হয়ে যায়। সারা রাত ঘুমাতে পারিনি। অনেক জায়গায় খুঁজেছি। ছেলেকে কেউ মেরে ফেলে দিয়েছে বলে আমাদের মনে হচ্ছে। 

    স্থানীয় বাসিন্দা তাপস রায়, অভিজিৎ মালিক বলেন, বরুণ নিখোঁজ হওয়ার পর আমরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেছিলাম। কিন্তু, তাকে পাওয়া যায়নি। পৃথক দু’টি পুকুরের পাড় থেকে সাইকেল ও দেহ পাওয়া গিয়েছে। তাই ঘটনাটি অস্বাভাবিক লাগছে। আমরা চাই পুলিস ঘটনার তদন্ত করে প্রকৃত সত্য বের করুক।  বরুণ দাস
  • Link to this news (বর্তমান)