• 'শরীরে ডাইনি ভর করেছে', অর্ধনগ্ন অবস্থায় গৃহবধূকে চরম অত্যাচার, ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ...
    আজকাল | ০৭ জুলাই ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: শরীরে ডাইনি ভর করেছে। এই অপবাদে এক গৃহবধূকে অর্ধনগ্ন করে নাচানোর অভিযোগ উঠল মহিলা ওঝার বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে পুলিশ গ্রামে গিয়ে দুই ওঝাকে আটক করে। সেই সঙ্গে গৃহবধূকে উদ্ধার করে বীরভূমের রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছে। স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের রামপুরহাট থানার তাতঁবাঁধা গ্রামে। ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য। 

    পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এক গ্রামের গৃহবধূ দীর্ঘদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। বহু চিকিৎসা করেও কোন ফল মেলেনি বলে পরিবারের দাবি। এরপরেই গ্রামবাসীরা ওঝার শরণাপন্না হন। ওঝা নিদান দেন গৃহবধূকে ডাইনি ধরেছে। তাঁকে সামনে এনে পুজো করলেই সব অসুখ সেরে যাবে। পুজোর জন্য মোটা অঙ্কের খরচ রয়েছে। সেই মতো দুই পাড়ার ৫০-৬০ ঘর থেকে চাঁদা তোলেন গ্রামবাসীরা। এরপরেই রবিবার সকালে সীমান্তবর্তী ঝাড়খণ্ড থেকে দুই ওঝা গ্রামে পৌঁছয়। গ্রামের হনুমান বেদিতে শুরু হয় পুজো। সেখানে নিয়ে আসা হয় ডাইনি সন্দেহে গ্রামের ওই গৃহবধূকে। এরপর গৃহবধূকে অর্ধনগ্ন করে সেখানে নাচানো হয়। ভিড়ে ঠাসা সেই দৃশ্য সকলেই উপভোগ করতে থাকেন। 

    আদিম রীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে রামপুরহাট থানায় ফোন করেন গ্রামের বাসিন্দা সন্তোষ মির্ধা। খবর পেয়ে গ্রামে যায় বিশাল পুলিশবাহিনী। তারা লাঠিচার্জ করে গ্রামবাসীদের সরিয়ে দেয়। এরপরেই মহিলা এবং তাঁর স্বামীকে উদ্ধার করে রামপুরহাটে নিয়ে আসে। মহিলাকে ভর্তি করা হয় রামপুরহাট গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে।

    ওই গৃহবধূর ছেলে অজয় রায় বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে মা মানসিক অবসাদগ্রস্থ ছিল। আমরা অনেক চিকিৎসা করিয়েছি। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। তাই গ্রামবাসী মিলে ওঝা ডেকে রোগ দূর করাচ্ছিলাম। ওঝা আমাদের ভালোর জন্যই করছিল”। গ্রামের বাসিন্দা সন্তোষ মির্ধা বলেন, “আমি খবর পেয়ে সেখানে যাই। দেখলাম এক গৃহবধূকে অর্ধনগ্ন করে পুজোর নামে নাচানো হচ্ছে। আমি প্রতিবাদ করি। কারণ গ্রামসুদ্ধ লোকের সামনে এভাবে কোন মহিলাকে অর্ধনগ্ন করা উচিত নয়। এরপরেই আমি সেখান থেকে পালিয়ে এসে থানায় ফোন করি। পুলিশ ওঝাকে আটক করেছে। গৃহবধূ এবং তার স্বামীকে নিয়ে গিয়েছে”।

    প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের এপ্রিল মাসে একই অঞ্চলের বটতলা গ্রামে সুনীতা মুর্মু নামে এক কিশোরীকে বিবস্ত্র করে আশেপাশের আটটি গ্রাম ঘোরানো হয়েছিল। তাঁর অপরাধ ছিল সে ভিন সম্প্রদায়ের পুরুষের সঙ্গে মেলামেশা করেছিল। সেই ভিডিও সমাজ মাধ্যমে মোবাইলে মোবাইলে ঘুরতে থাকে। এ নিয়ে সারা দেশ তোলপাড় হয়ে যায়। 
  • Link to this news (আজকাল)