• উত্তরবঙ্গের বন্যার সমস্যা মেটাতে অত্যাধুনিক ড্রেজিংয়ের পরিকল্পনা রাজ্যের
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৭ জুলাই ২০২৫
  • প্রতি বছরের মতো এবারও প্লাবিত উত্তরবঙ্গ! মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ অনুযায়ী, ইন্দো-ভুটান রিভার প্রজেক্টে বাংলার প্রতিনিধিত্ব না থাকার কারণেই অবাধে জল ছাড়ছে ভুটান! এর জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলা। সেই সমস্যায় ইতি টানতে আর কেন্দ্রের দ্বারস্থ নয়, গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকারই। ডুয়ার্সের একাধিক নদীতে অত্যাধুনিক ড্রেজিংয়ের পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্যের সেচ দপ্তর। পাশাপাশি খরচ কমাতে নতুন রয়্যালটি ভিত্তিক মডেল নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।

    এই বিশেষ মডেলে, সরকার কোনও অর্থ ব্যয় না করে নদী খাত থেকে তোলা বালি-পাথর উত্তোলনের বিনিময়ে ঠিকাদারদের খননের দায়িত্ব দেবে। ইতিমধ্যে সেচ দপ্তর জয়ন্তী-সহ উত্তরবঙ্গের একাধিক নদীর সম্ভাব্য খননস্থল চিহ্নিত করে প্রাথমিক সমীক্ষা চালিয়েছে। তবে বক্সা টাইগার রিজার্ভের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত জয়ন্তী নদীর ক্ষেত্রে বন দফতরের ছাড়পত্র প্রয়োজন হবে। ওই ছাড়পত্র মিললেই ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু হবে বলে সেচ দপ্তর সূত্রের খবর। এরই মাঝে সামগ্রিক পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যের সেচ ও জলপথ মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া।

    নদ, নদী ও খাল সংস্কারে রাজ্যের তরফে ওই রয়্যালটি ভিত্তিক অভিনব প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার পরিকল্পনা করছে নদী বক্ষ থেকে বালি ও পলিমাটি সরিয়ে টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করে রাজস্ব আদায় করবে। মন্ত্রীর দাবি, এই প্রক্রিয়ায় প্রায় ১১২ কোটি টাকার রাজস্ব আসতে পারে, যা দিয়ে সংস্কার সম্ভব হবে। মন্ত্রী আরও জানান, ‘বিধানসভা কেন্দ্রভিত্তিক সার্ভে করে খালের সংখ্যা, মজে যাওয়া খাল ও সংস্কারের প্রয়োজন- সবকিছুর হিসাব তৈরি হয়েছে। তবে এই খাতেও কেন্দ্র কোনও সহযোগিতা করেনি। পরিকল্পনা থেকে বাস্তবায়ন, সবই রাজ্য সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা। ভুটান থেকে প্রবাহিত নদীগুলির জলে উত্তরবঙ্গ প্লাবিত হয়। মূলত এই সমস্যা মেটাতেই ডুয়ার্সের একাধিক নদীতে ড্রেজিংয়ের পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে।’

    কীভাবে কাজ হবে খাল খননের এই নয়া প্রকল্পে? মন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের বহু খাল, ছোট নদী নিয়মিত ড্রেজিং করা হয় না। এক্ষেত্রে পর্যাপ্ত অর্থের অভাব থাকে। ফলে বন্যার সময় সেই জল উপচে পড়ে সমগ্র এলাকা প্লাবিত হয়। গোটা উত্তর ভারতের জল বাংলার উপর দিয়েই প্রবাহিত হয়, তাই স্বভাবত বর্ষাকালে বাংলার বহু জেলা প্লাবিত হয়। এই সমস্যা রুখতে আমরা হোমওয়ার্ক করেছি। এক্ষেত্রে একাধিক দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা নদীবক্ষ, খাল ইত্যাদি কাটবে, তারা কিছুটা মৃত্তিকা নেবে। এর বিনিময়ে রাজ্য সরকার রয়্যালটি পাবে। সংস্থাও স্বাধীন মত কাজ করতে পারবে।’
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)