সামান্য বৃষ্টিতে ডুবে থাকে রাস্তা। টানা বৃষ্টি হলে রাস্তায় জমে হাঁটুসমান জল। আর তা পেরিয়ে চলে যাতায়াত। এই বর্ষায় পান্ডুয়ার বিভিন্ন এলাকার চেনা ছবি এমনই। তেলিপাড়া, খারাজিপাড়া, স্টেশন রোড, জিটি রোডের ধারে বিদ্যুৎ দফতরের সামনে, অরবিন্দ পল্লির অবস্থা সবথেকে খারাপ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বেহাল নিকাশির জন্যে জল বেরোতে সমস্যা হচ্ছে। রাস্তায় জল জমে থেকে সমস্যা বাড়াচ্ছে। প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েও ফল মিলছে না বলে অভিযোগ।
প্রশাসনের কর্তারা অবশ্য সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন। তাঁরা জানান, আদতে ব্লক জুড়ে সুষ্ঠ কোনও নিকাশি ব্যবস্থা না থাকার জন্যই এমন হাল। তবে পান্ডুয়ার বিডিও সেবন্তী বিশ্বাস বলেন, ‘‘ব্লকে জল নিকাশি ব্যবস্থার সুষ্ঠ পরিকল্পনা করা হয়েছে। পূর্ত (সড়ক) দফতরের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করে শীঘ্র সমাধানসূত্র বের করা হবে।’’
তেলিপাড়া থেকে স্টেশন রোডের অবস্থার কথাই ধরা যাক। এলাকাবাসী জানান, বড় শপিং মল-সহ অন্য দোকানের জল বেরনোর পথ ঠিক নেই। সেকারণে ওই সব জায়গা থেকে জল বেরোতে না পেরে জমে থাকে রাস্তায়। ফলে রাস্তায় জমা ওই জল পেরিয়েই গাড়ি চলে। এমনকি হাঁটতেও হয় ওই জলমগ্ন পথ দিয়েই। স্টেশন রোডের দোকানদার গৌতম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে দোকানদারি করছি। আগে এমন সমস্যা ছিল না! এখন রাস্তার জল দোকানেও ঢুকে যাচ্ছে। প্রশাসন যদি নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক না করে, তাহলে ভবিষ্যতে সমস্যা বাড়বে।’’
পান্ডুয়ার বাসিন্দা ঘনশ্যাম সাউয়ের কথায়, ‘‘রাস্তা চওড়া করতে হবে। তবে সকলের আগে প্রয়োজন নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক করার।’’ তাঁর এলাকাতেও সামান্য বৃষ্টিতে জল জমা নিয়ে তিতিবিরক্ত সকলে।
এই বেহাল নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন বিরোধীরা। পান্ডুয়ার প্রাক্তন বাম বিধায়ক আমজাদ হোসেনের কথায়, ‘‘লোকসংখ্যা বাড়ছে। অথচ এলাকার জল নিকাশি সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। এখানে বড় নিকাশি নালা প্রয়োজন।’’ বিজেপি নেতা তুষার মজুমদার বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার লোক দেখানো কাজ করছে। সাধারণ মানুষের উপকারের জন্য কোনও উন্নয়ন করেনি। এত দিনেও এই এলাকায় কেন সুষ্ঠ নিকাশি ব্যবস্থা হল না, এটাই তো বড় প্রশ্ন।’’
পান্ডুয়ার তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান বৈশাখী সরকার বলেন, ‘‘নিকাশি ব্যবস্থা করা নিয়ে সমস্যা রয়েছে। রাস্তার ধারে দোকান থাকায় সমস্যা বাড়ছে। তবুও পঞ্চায়েত সমিতি থেকে এ বছর একটি পরিকল্পনা করা হয়েছে। তাছাড়া জিটি রোড সম্প্রসারণের ফলে উঁচু হয়েছে। বৃষ্টির জল সব নীচের দিকে নেমে এসে সমস্যা বাড়াচ্ছে।’’